বলিউড সুপারস্টার সালমান খান দীর্ঘদিন ধরে প্রাণনাশের হুমকির মধ্যে রয়েছেন। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না ‘ভাইজান’। কঠোর নিরাপত্তার ঘেরাটোপে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাকে, যার ফলে তার জীবন এখন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে শুধু বাড়ি আর শুটিং সেটের মধ্যে।
ভয় পান না সালমান খান
যাকে নিয়ে এত উত্তেজনা, সেই সালমান খান কিন্তু বিন্দুমাত্র ভয় পাচ্ছেন না। এতদিন হুমকি নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও এবার প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন তিনি। সম্প্রতি নিজের আসন্ন সিনেমা সিকান্দার-এর প্রচারে গিয়ে এই প্রসঙ্গে কথা বলেন অভিনেতা।
সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের হুমকি কি তাকে ভয় পাইয়েছে? উত্তরে সালমান খান বলেন, “ঈশ্বর, আল্লাহ সব সমান। আমি শুধু তাকেই মানি। মানুষের আয়ু যতদিন লেখা আছে, ততদিনই আমাদের বাঁচতে হবে।”
তবে নিরাপত্তার কড়াকড়ি যে কখনো কখনো বিরক্তিকর হয়ে ওঠে, সেটিও অকপটে স্বীকার করেছেন সালমান। তিনি বলেন, “এখন এত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হয় যে কখনো কখনো বিরক্ত লাগে। এটাই সমস্যা।”

বাড়ি আর শুটিং সেটেই বন্দি জীবন
হুমকির পর থেকে সালমান খানের জীবন শুধুমাত্র বাড়ি এবং সিনেমার সেটেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। খুব একটা প্রকাশ্যে আসেন না, এমনকি ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরার সামনেও তাকে কম দেখা যায়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের দেখলে আমি বিচলিত হই না, বরং ওরা না থাকলেই মনে হয়, আমার স্টাইলে ব্যাঘাত ঘটছে! এখন জীবনটা শুধু গ্যালাক্সি (বাড়ি) আর শুটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। বাড়ি থেকে শুটিং, আবার শুটিং থেকে বাড়ি – এই চলছে।”
বিষ্ণোই গ্যাংয়ের দীর্ঘদিনের হুমকি
১৯৯৮ সালে রাজস্থানের কঙ্কানি গ্রামে হাম সাথ সাথ হ্যায় সিনেমার শুটিং চলাকালীন কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের অভিযোগ ওঠে সালমান খানের বিরুদ্ধে। সেই সময় থেকেই বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের রোষানলে পড়েন তিনি। লরেন্স বিষ্ণোই ও তার গ্যাং বহুবার সালমানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।
গত বছর থেকে এই হুমকির মাত্রা আরও বেড়েছে। কয়েক মাস আগে সালমানের মুম্বাইয়ের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গুলি ছোড়া হয়। এছাড়া, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাবা সিদ্দিকিকে হত্যা করা হয়, এবং বিদেশে তার এক বন্ধুর বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
নিরাপত্তা আরও জোরদার
এই ক্রমাগত হুমকির কারণে সালমান খানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাচ্ছেন। নিজের সুরক্ষার জন্য তিনি দুবাই থেকে ২ কোটি টাকা খরচ করে বুলেটপ্রুফ গাড়ি এনেছেন এবং তার বাংলোর বারান্দা সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ কাচ দিয়ে আবৃত করা হয়েছে।
তবে কি আজীবন এই নিরাপত্তার বেড়াজালে আবদ্ধ থাকতে হবে তাকে? এ প্রসঙ্গে স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন সালমান খান – “যত দিন আয়ু লেখা আছে, তত দিনই বাঁচব।”