অতল জলের আহ্বান চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তপন সিংহ। সংগীত পরিচালনা করেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। এতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তন্দ্রা বর্মণ, ছবি বিশ্বাস, ছায়া দেবী, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ।
গ্রামের মেয়ে সাবিত্রী একদিন মায়ের তিরস্কারে সে ঘর ছেড়ে পথে নামে। একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় সাবিত্রীর স্মৃতি লোপ পায়। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন কলকাতার ব্যবসায়ী জয়ন্ত চৌধুরী। জয়ন্ত সাবিত্রীর পরিচয় জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এবং তাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন। জয়ন্তর বিশৃঙ্খল সংসারে সাবিত্রী শৃঙ্খলার সাথে পরিচালিত করে। জয়ন্তর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাবিত্রী ও জয়ন্তর সম্পর্ক নিয়ে কটু মন্তব্য করে, জয়ন্ত সাবিত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সংসারের শৃঙ্খলা আবার ভেঙে পড়ে। জয়ন্ত সাবিত্রীর সন্ধানে যায়।
অতল জলের আহ্বান চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা—আর.ডি. বনশল।
- কাহিনি—প্রতিভা বসু।
- চিত্রনাট্য ও সংলাপ—নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় ৷
- আলোকচিত্র তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা – অজয় কর।
- সংগীত পরিচালনা — হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
- চিত্রগ্রহণ—কানাই দে।
- শব্দগ্রহণ—অতুল চট্টোপাধ্যায়, শ্যামসুন্দর ঘোষ।
- শিল্প নির্দেশনা—কার্তিক বসু।
- সম্পাদনা – বৈদ্যনাথ চট্টোপাধ্যায়।
- গীতিকার—গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
অতল জলের আহ্বান চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তন্দ্রা বর্মণ, ছবি বিশ্বাস, ছায়া দেবী, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, অপর্ণা দেবী, শিশির বটব্যাল, আশা দেবী, পঞ্চানন ভট্টাচার্য, শান্তা দেবী, বীরেন চট্টোপাধ্যায়, ইরা চক্রবর্তী, মণি শ্রীমানী, রমা দাস, ঋষি বন্দ্যোপাধ্যায়।
নেপথ্য সংগীত—
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সুজাতা চক্রবর্তী।
অতল জলের আহ্বান চলচ্চিত্রের কাহিনি—
গ্রামের মেয়ে সাবিত্রী (তন্দ্রা) আর দশটা মেয়ের মতো নয়, সে সুন্দরী হলেও সাজতে ভালোবাসে না, ইচ্ছে হলে সে অন্যের গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে খায়, কথা কম বলে, পাড়ার ছেলেরা তাকে পাগলি বললে সে ঢিল ছুঁড়ে প্রত্যুত্তর দেয়। একদিন মায়ের তিরস্কারে সে ঘর ছেড়ে পথে নামে।
একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সাবিত্রী হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও তার স্মৃতি লোপ পায়। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন কলকাতার ব্যবসায়ী জয়ন্ত চৌধুরী (সৌমিত্র)। জয়ন্ত সাবিত্রীর পরিচয় জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এবং তাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন। জয়ন্তর বাবা সীমান্ত চৌধুরী (ছবি) এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ছেলের উপর দিয়ে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন দার্জিলিং-এ।
তাঁর ইচ্ছে বান্ধবী অনুরাধার (ছায়া) কন্যা লতুর সাথে জয়ন্তর বিয়ে হোক, কিন্তু জয়ন্ত বিষয়টি কানে তুলতে রাজি নয়। এদিকে কলকাতার বাড়ির কোনো কাজই জয়ন্ত নিজে দেখে না। বিশৃঙ্খল সংসারে কর্মচারীরা নিজেদের মতো চলে। সাবিত্রী প্রথম দিকে বিষয়টিতে নজর না দিলেও পরে কাজের লোকদের উপর শাসন ও ভালোবাসা দিয়ে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে।

সব কাজই এখন সময়মতো শৃঙ্খলার সাথে পরিচালিত হয়, জয়ন্তও এই পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পারে, তার প্রতিটি প্রয়োজনীয় জিনিসই সে হাতের কাছে পায়। যেহেতু সাবিত্রী নিজেকে আড়ালে রেখে সব কাজ সম্পন্ন করে, তাই জয়ন্তর পক্ষে বোঝা সম্ভব হয় না কি ভাবে সব ঠিকমতো চলছে।
হিতৈষী বন্ধুর পরিচয়ে জয়ন্তর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাবিত্রী ও জয়ন্তর সম্পর্ক নিয়ে কটু মন্তব্য করে, অসন্তুষ্ট জয়ন্ত সাবিত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়, সাবিত্রী আবার গৃহহীন হয়। সাবিত্রী আশ্রয় পায় অনুরাধা দেবীর বাড়িতে। কিছুদিনের মধ্যেই সংসারের শৃঙ্খলা আবার ভেঙে পড়ে, জয়ন্ত বুঝতে পারে সাবিত্রীর চেষ্টাতেই তার বিশৃঙ্খল সংসারে শৃঙ্খলা এসেছিল। সে সাবিত্রীর সন্ধানে অনুরাধা দেবীর বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও দেখুনঃ