অন্তরীণ চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- ১৯৯৩ সালের একটি বাংলা ভাষায় ভারতীয় চলচ্চিত্র। এটি মৃণাল সেন দ্বারা পরিচালিত ও সাদাত হাসান মান্টো রচিত বাদশাহাত কা খাতমাহ (১৯৫০) নামের একটি গল্প অবলম্বনে (তবে চিত্রনাট্যটির আলাদা সমাপ্তি রয়েছে) নির্মিত। এতে অভিনয় করেছেন অঞ্জন দত্ত ও ডিম্পল কাপাডিয়া।
অনুপ্রেরণা জন্য, এক তরুণ লেখক (অঞ্জন দত্ত) কলকাতায় এক বন্ধুর পুরানো প্রাসাদে একা বাস করতে শুরু করে। এক রাতে, সে ফোনে বেনামি অচেনা ভদ্রমহিলার (ডিম্পল কাপাডিয়া) সাথে কথা বলতে শুরু করেন। তাদের জীবনের বিবরণ প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে কথোপকথনটি শীঘ্রই একটি সম্পর্কের মধ্যে বিকাশ লাভ করে। তারা সুযোগ পেয়ে একটি ট্রেনে উঠল, যখন ডিম্পল তার কণ্ঠস্বর এবং কথা বলার ধরন থেকে তাকে চিনতে পারল, ঠিক তখনি সে কোনও এক পাশের স্টেশানে ট্রেনটিতে আরোহণ করে চলে গেল।
অন্তরীণ চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা—এন এফ ডি সি এবং দূরদর্শন।
- কাহিনি—সাদাত হাসান মান্টো।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা—মৃণাল সেন।
- চিত্রগ্রহণ—শশী আনন্দ।
- শিল্প নির্দেশনা—গৌতম বসু।
- সংগীত পরিচালনা—শশী আনন্দ ও বাণীপ্রসাদ বণিক।
- সম্পাদনা— মৃন্ময় চক্রবর্তী।
অন্তরীণ চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
ডিম্পল কাপাডিয়া, অঞ্জন দত্ত, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপ্তি রায়, কাজল গুপ্ত, অমল মুখোপাধ্যায়, মৌসুমী মজুমদার, তথাগত সান্যাল।
অন্তরীণ চলচ্চিত্রের কাহিনি—
ছবির নায়ক একজন লেখক (অঞ্জন), তার এক বন্ধুর আমন্ত্রণে কিছুদিনের জন্য একটি পরিত্যক্ত অট্টালিকায় বাস করতে আসে—বন্ধুর ধারণা এখানে কিছুদিন একা বাস করলে সে তার লেখার কিছু উপাদান সংগ্রহ করতে পারবে—রবীন্দ্রনাথের ক্ষুধিত পাষাণে অশরীরীদের উপস্থিতির মতো এখানেও কিছু অভিজ্ঞতা হতে পারে। বাড়ির কেয়ারটেকার বনমালী একটি কাজের লোককে রেখে দেয় লেখকের দেখা শোনার জন্য।
লেখকের নির্জনতা ভঙ্গ করে টেলিফোনের শব্দ, এক মহিলা (ডিম্পল) নিজের পরিচয় না দিয়েই জানায় যে নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য সে কারও সাথে কথা বলতে চায়, লেখকও কথা চালিয়ে যেতে থাকে। ক্রমশ লেখক ঐ মহিলা সম্বন্ধে অনেক কথা জানতে পারে। মহিলার মা সংসারের অভাবের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মেয়েকে একজন পয়সাওয়ালা লোকের হাতে তুলে দেয়।

এই লোকটি একদিকে তার পরিবার প্রতিপালনের দায়িত্ব নেয়, তার সাথে সাথে মহিলাকে একটি নির্জন ফ্ল্যাটে এক জন পরিচারিকার সাথে রেখে দেয়। মহিলার বাইরে যাওয়ার স্বাধীনতা থাকলেও সে স্বেচ্ছায় নির্বাসন মেনে নেয়। লেখক মেয়েটির সাথে দেখা করতে চাইলেও মহিলা রাজি হয় না। কিন্তু লেখককে তার টেলিফোন নম্বর দেয়। ঘটনাক্রমে মহিলা মা-বাবার সাথে দেখা করতে যায়, ফেরার পথে ট্রেনে সে লেখককে চিনতে পারলেও নিজের পরিচয় দেয় না, অন্তরীণ জীবনকে মেনে নেওয়া ছাড়া তার কোনো পথ নেই।
প্রকাশনা—
এই ছবির চিত্রনাট্য বিতর্ক থেকে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়। পুরস্কার—১৯৯৩ সালে বাংলা ভাষায় নির্মিত শ্রেষ্ঠ ছবি হিসাবে ভারতের রাষ্ট্রপতির সম্মান লাভ করে।
আরও দেখুনঃ