অসুখ চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- অসুখ, ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র।
এই চলচ্চিত্রটি তারকা মেয়ে, রোহিণী (দেবশ্রী রায়) এবং তার পিতা সুধাময় (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)-এর বিভেদ নিয়ে তৈরি, যিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে তার মেয়ের উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। রোহিণীর মা (গৌরী ঘোষ), যাকে হঠাৎ করে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কেউ জানে না তিনি কোন কারণে অসুস্থ। এই অসুস্থতা রোহিণীর জীবনে বিভিন্ন ঘটনা ঘটায় এবং বাবার সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে।
অসুখ চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা — ডি রামানাইড়।
- কাহিনি— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা — ঋতুপর্ণ ঘোষ।
- চিত্রগ্রহণ অভীক মুখোপাধ্যায়।
- সংগীত পরিচালনা – দেবজ্যোতি মিশ্র, পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
- শিল্প নির্দেশনা – ইন্দ্রনীল ঘোষ।
- সম্পাদনা – অর্ঘকমল মিত্র।
অসুখ চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
দেবশ্রী রায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, গৌরী ঘোষ, শিলাজিৎ মজুমদার, অর্পিতা পাল, শঙ্কর চক্রবর্তী, রীতা কয়রাল, পিনাকী ভট্টাচার্য, সুদেষ্ণা রায়।
অসুখ চলচ্চিত্রের কাহিনি—
রোহিণী (দেবশ্রী) চলচ্চিত্র শিল্পের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সে যখন জনপ্রিয়তার শিখরে অবস্থান করছে তখনই কিছু ঘটনা তাকে প্রবল ভাবে আলোড়িত করে।। প্রথমত তার দীর্ঘদিনের প্রেমিক (শিলাজিৎ) সম্বন্ধে খবর পায় যে সে একটি ত্রিকোণ প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে মৃত্তিকার (অর্পিতা) সাথে। মজার কথা হল কিছুদিন আগেই রোহিণী আগ বাড়িয়ে মৃত্তিকার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করেছিল। দ্বিতীয়ত রোহিণীর মা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর জানা যায় তাঁর এইডস হয়েছে।
পর পর দুটি ঘটনা রোহিণীকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়। একদিকে সে বাড়ির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অন্যদিকে তার কর্মব্যস্ততার মধ্যেই হাসপাতালে যাওয়া, ডাক্তারের সাথে কথা বলা, কৌতূহলী সাংবাদিকদের মোকাবিলা করা প্রভৃতি কাজে তাকে অনেক সময় দিতে হয়।
সব কিছু মিলে রোহিণীর মনের মধ্যে একটা সংকট তৈরি হয়। ভালো কোনো কিছুর উপরই তার বিশ্বাস থাকে না, এমনকী যে বাবা-মাকে সে জীবনে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছিল, সেটাও বোধহয় নষ্ট হয়ে যাবে, বাবার উপর প্রচণ্ড অভিমানের সময় তার রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা মনে আসে।
“ছোট্ট আমার মেয়ে সঙ্গিনীদের ডাক শুনতে পেয়ে
………………>
…………>
……>
হারিয়ে গেছি আমি
রবীন্দ্রনাথ এই ছবিতে না থেকেও তাঁর কবিতার মধ্য দিয়ে রোহিণীকে তার সব কাজে অনুপ্রেরণা দেন। ছবিটি ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

পুরস্কার –
১৯৯৯ সালে বোম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে FIPRESCI পুরস্কার লাভ করে।
আরও দেখুনঃ