আপনজন চলচ্চিত্র

আপনজন চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- ১৯৬৮ সালে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তপন সিংহ।

আনন্দময়ী গ্রামে প্রয়াত স্বামীর ভিটায় বাস করেন। তার আপনজন মন্টু ও তার স্ত্রী লতি তাকে কলকাতায় এনে বিনা পয়সায় কাজের লোক হিসাবে আশ্রয় দেয়। পাড়ার যুবক রবি পাড়ার লোকে গুণ্ডা বললেও তিনি তাদের গুণ্ডা ভাবতে পারেন না।  রবির দলের ছেলেরা আনন্দময়ীকে ঠাকুমা বলে ডাকে। দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলে মারামারি থামাতে এসে ছেনোর দলের গুলিতে আনন্দময়ীর মৃত্যু হয়।

 

আপনজন চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

আপনজন চলচ্চিত্র

  • প্রযোজক – কে. এল. কাপুর প্রোডাকসন্স।
  • কাহিনি – ইন্দ্র মিত্র।
  • চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও সংগীত – তপন সিংহ।
  • চিত্রগ্রহণ – বিমল মুখোপাধ্যায়।
  • শিল্প নির্দেশনা – কার্তিক বসু।
  • সম্পাদনা – সুবোধ রায়।
  • শব্দগ্রহণ – অতুল চট্টোপাধ্যায়, অনিল তালুকদার।
  • গীতিকার — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অতুলপ্রসাদ সেন।

আপনজন চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —

ছায়া দেবী, স্বরূপ দত্ত, মৃণাল মুখোপাধ্যায়, কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ মুখোপাধ্যায়, শমিত ভঞ্জ, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, থুই বন্দ্যোপাধ্যায়, রনি চৌধুরী, রেবা দেবী, পূর্ণিমা দেবী, দিলীপ রায়, চিন্ময় রায়, প্রেমাংশু বসু, নৃপতি চট্টোপাধ্যায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, নির্মলকুমার, সুমিতা সান্যাল, সন্তোষ সিংহ, বঙ্কিম ঘোষ। নেপথ্য সংগীত – শ্যামল মিত্র, পার্থ মুখোপাধ্যায়।

 

 

অলকা গঙ্গোপাধ্যায় । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

আপনজন চলচ্চিত্রের কাহিনি—

আনন্দময়ী (ছায়া দেবী) বর্তমানে বিধবা, গ্রামে প্রয়াত স্বামীর (চিন্ময়) ভিটায় বাস করেন। অল্প বয়সে তাঁর বিয়ে হয়, বর্তমানে তার সম্বল তাঁর প্রয়াত স্বামীর স্মৃতি, স্বামীর গ্রাম, স্বামীর থিয়েটার প্রীতি, তার রাগ, ভালোবাসা। কলকাতা থেকে গ্রামে আসে মন্টু (প্রেমাংশু), দূর সম্পর্কের আত্মীয়। মন্টু ও তার স্ত্রী লতি (সুমিতা) তাদের আপনজন আনন্দময়ীকে একা গ্রামে থাকতে দিতে রাজি নয়। আনন্দময়ী খুশি হয়ে মন্টুর সাথে কলকাতায় এসে বুঝতে পারেন। তিনি বিনা পয়সায় কাজের লোক হিসাবে এই সংসারে আশ্রয় পেয়েছেন।

আত্মসর্বস্ব মধ্যবিত্তের কলকাতার স্বরূপ তিনি বুঝতে পারেন, অনাথ শিশু চুনচুন ও টুনটুনির প্রতি ভালোবাসায় জড়িয়ে তাঁকে মন্টুর আশ্রয় ছাড়তে হয়। তিনি দেখেন পাড়ার যুবক রবি (স্বরূপ), ঝিন্টু, সন্তু (সন্তু), মানু ইত্যাদিকে। তাদের পাড়ার লোকে গুণ্ডা বললেও তিনি তাদের গুণ্ডা ভাবতে পারেন না। তিনি দেখেন রবির বিরুদ্ধ দলের ছেনো (শমিত), অনুকূল, ভোলা ইত্যাদিকেও।

রবির দলের ছেলেরা আনন্দময়ীকে ঠাকুমা বলে ডাকে, আনন্দময়ী, চুনচুন ও টুনটুনির খাবারের ব্যবস্থা রবি ও তার দলের ছেলেরাই করে। দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের হয়ে রবি ও ছেনোর বাহিনী কাজ করে, ভোটের সময় দুই দল সরাসরি পিস্তল, বোমা নিয়ে মারামারি শুরু করে, মারামারি থামাতে এসে ছেনোর দলের গুলিতে আনন্দময়ীর মৃত্যু হয়।

নিজের জীবন দিয়ে আনন্দময়ী দাঙ্গা বন্ধ করতে বাধ্য করেন। ছবিটি তৎকালীন সময়ে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল, কোন ধরনের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় এই ধরনের মস্তান বাহিনী তৈরি হয় তার সম্বন্ধে পরিচালকের নীরবতার বিরুদ্ধে বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা সরব হয়েছিলেন।

 

Google News আপনজন চলচ্চিত্র
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

পুরস্কার—

১৯৬৮ সালে ছবিটি ভারতের রাষ্ট্রপতির রৌপ্য পদক (সেরা আঞ্চলিক ছবির জন্য) লাভ করে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment