আবহমান চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালে মুক্তি পায়। পরিচালনা ও পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন করেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
অনিকেত একজন উচুদরের ও নামকরা ফিল্মমেকার। এককালের এক অভিনেত্রী দীপ্তিকে নিজের ছবিতে নিতে গিয়ে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন-যার পরিণাম বিয়ে। সেসময় সে ছবি আর তিনি শেষ করতে পারেননি। কালের প্রাবাহে তার সংসারে ‘অপ্রতিম’ এর জন্ম হয়। তাদের সংসার বেশ সুখেই কাটছিলো। ছবির প্লট মোড় নেয় যখন অনিকেতের এক ছবিতে অডিশন করতে আসে ‘শিখা’ নামের এক অভিনেত্রীর মাঝে যৌবনের দীপ্তিকে খুজে ফিরেন। দীপ্তির মনে সন্দেহ জাগে। এক সময় মনে হতে থাকে অনিকেত বুঝি শিখার সাথে অবৈধ প্রেমে পড়েছে। দীপ্তির এই সন্দেহ অনিকেতের বেচে থাকার শেষ দিন পর্যন্ত থেকে যায়।
আবহমান চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা — বিগ পিকচার্স।
- কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা ঋতুপর্ণ ঘোষ।
- সংগীত পরিচালনা – ২১ গ্রাম।
- চিত্রগ্রহণ – অভীক মুখোপাধ্যায়।
- সম্পাদনা – অর্ধাকমল মিত্র।
আবহমান চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
দীপঙ্কর দে, মমতাশঙ্কর, যীশু সেনগুপ্ত, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, রীয়া সেন, শোভা সেন।

আবহমান চলচ্চিত্রের কাহিনি—
দেশের একজন নামকরা চলচ্চিত্র পরিচালক অনিকেত (দীপঙ্কর) ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তখনকার দিনের নামী অভিনেত্রী দীপ্তিকে (মমতা)। দীপ্তি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই অনিকেতের সংসারে প্রবেশ করে। দীপ্তি সংসার পরিচালনার পাশাপাশি অনিকেতের চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজে সাহায্য করে। তাদের একমাত্র সন্তান অপ্রতিম (যীশু) নিজেও ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র পরিচালনার সাথে যুক্ত হতে চায়। তাদের সংসারটিকে আদর্শ সংসার বলা যেতে পারে।
অনিকেত নট ও নাট্যকার গিরিশচন্দ্রের উপর একটি ছবি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় এবং বিনোদিনীর ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য নির্বাচন করে শিখাকে (অনন্যা)। যৌবনের দীপ্তির সাথে বর্তমান শিখার অনেক মিল আছে।
শিখা আগে অভিনয় করলেও অনিকেতের ছবির উপযুক্ত অভিনেত্রী নয়, তাকে পরিশীলিত অভিনেত্রী হিসাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নেয় দীপ্তি এবং ক্রমশ তাকে নিয়ে কাজ করতে করতে অনিকেত পুত্রের বয়সি শিখার প্রেমে পড়ে। শিখার সাথে অনিকেতের ঘনিষ্ঠতা সংবাদ মাধ্যমের গোচরেও আসে এবং শহরে সেটি চর্চার বিষয় হয়ে ওঠবার আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অনিকেতের মৃত্যু হয়।
শিখা বর্তমানে একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, অনিকেতের শেষ শয্যায় দেখতে যাওয়ার সময়ও সে তার সাজসজ্জা নিয়ে অবহিত এবং মৃত্যুবাসরে তার উপস্থিতির ফলে উপস্থিত ব্যক্তিদের অনেকেই তার প্রতি আগ্রহী হয়, ফলে মৃত্যুর মতো গম্ভীর পরিবেশও অপেক্ষাকৃত লঘু হয়ে পড়ে।
পুরস্কার—
ছবিটি ২০১০ সালে দুটি জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়। অনন্যা চট্টোপাধ্যায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং ঋতুপর্ণ ঘোষ শ্রেষ্ঠ পরিচালকের সম্মান লাভ করেন।
আরও দেখুনঃ