আহ্বান চলচ্চিত্র

আহ্বান চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন অরবিন্দ মুখোপাধায়।

গ্রামের ছেলে বিমল ব্যানার্জী কলকাতায় অধ্যাপনা করলেও তার গ্রামের প্রতি ভালোবাসার খামতি নেই। অন্যদিকে গ্রামের বয়স্কা মহিলা রহিমের মা বিমলকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। তিনি বিমলকে গোপাল বলে ডাকেন।  বিমলের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে রহিমের মা জ্বর হওয়া সত্ত্বেও গঙ্গায় চান করে, জ্বর গায়ে রাত্রিবেলায় নদীতে স্নান করা রহিমের মার সহ্য হয় নি, তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত মারা যান। রহিমের মার মৃত্যুশয্যার পাশে বিমল উপস্থিত ছিল এবং শেষ কাজে অংশগ্রহণ করে।

 

আহ্বান চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

আহ্বান চলচ্চিত্র

  • প্রযোজনা —একতা প্রোডাকসন্স।
  • প্রযোজক – অমূল্য বসু।
  • কাহিনি – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • কাহিনি পরিবর্ধন, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা — অরবিন্দ মুখোপাধায়।
  • সংগীত পরিচালনা — পঙ্কজকুমার মল্লিক।
  • চিত্রগ্রহণ অমূলা বসু।
  • শিল্প নির্দেশনা —সুনীতি মিত্র।
  • শব্দগ্রহণ—অতুল চট্টোপাধ্যায়, সুজিত সরকার।
  • সম্পাদনা— সুবোধ রায়।
  • গীতিকার—শৈলেন রায়, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
  • নেপথ্য সংগীত — পঙ্কজ কুমার মল্লিক, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র।

আহ্বান চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —

অনিল চট্টোপাধ্যায়, সন্ধ্যা রায়, হেমাঙ্গিনী দেবী, লিলি চক্রবর্তী, গীতা দে, নিভাননী দেবী, শোভা সেন, শিপ্রা মিশ্র, গঙ্গাধর বসু, অনুপকুমার, সুখেন দাস, প্রেমাংশু বসু, নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়।

 

আহ্বান চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

আহ্বান চলচ্চিত্রের কাহিনি—

গ্রামের ছেলে বিমল ব্যানার্জী (অনিল) কলকাতায় অধ্যাপনা করলেও তার গ্রামের প্রতি ভালোবাসার খামতি নেই। চাকরি পাওয়ার পর সে কাকা ফটিকের (গঙ্গাপদ) সাহায্যে গ্রামের বাড়ি মেরামত করে বসবাসের উপযুক্ত করে। ছুটির দিনগুলি বিমল গ্রামের বাড়িতে কাটানোর চেষ্টা করে। কলকাতাবাসী বন্ধু সম্ভর (অনুপ) বাবা মা তাকে জামাই করার কথা চিন্তা করলেও পাপিয়া (লিলি) গ্রামে গিয়ে বাস করতে পারবে না বলে এই সম্পর্ক বিমল প্রত্যাখ্যান করে।

অন্যদিকে গ্রামের বয়স্কা মহিলা রহিমের মা (হেমাঙ্গিনী) বিমলকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। সংসারে রহিমের মার কেউ নেই, একমাত্র নাতি কলকাতায় থাকে, দিদিমার কোনো খবর রাখে না। বিমলের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নয় শুধু স্নেহের কারণেই তিনি বিমলকে গোপাল বলে ডাকেন। বিমলের কাকা ফটিকবাবু রক্ষণশীল মানসিকতার কারণে রহিমের মাকে অপমান করেন।

বিমল বিষয়টি অনুমোদন না করলেও কাকার বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে না। বিমলের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে রহিমের মা জ্বর হওয়া সত্ত্বেও গঙ্গায় চান করে বিমলের রোগ শয্যার পাশে উপস্থিত হলে ফটিকবাবু স্তম্ভিত হয়ে যান এবং রহিমের মার প্রতি নিজের আগের আচরণের কথা চিন্তা করে লজ্জিত বোধ করেন।

রহিমের মা বিমলের স্ত্রী হিসাবে গ্রামের মেয়ে মিলিকে (সন্ধ্যা) নির্বাচন করেছিলেন, ফটিকবাবুও বিমল ও মিলির ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে অনুমোদন করেন।

 

Google News আহ্বান চলচ্চিত্র
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

জ্বর গায়ে রাত্রিবেলায় নদীতে স্নান করা রহিমের মার সহ্য হয় নি, তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত মারা যান। রহিমের মার মৃত্যুশয্যার পাশে বিমল উপস্থিত ছিল। নিজে ব্রাহ্মণ সন্তান হওয়া সত্ত্বেও বিমল রহিমের মার মৃতদেহ অন্যদের সাথে কাঁধে নেয় এবং শেষ কাজে অংশগ্রহণ করে।

ছবিটি আর্থিক সাফল্য না পেলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর নির্মিত ছবি হিসাবে সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment