উত্তরণ চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সন্দীপ রায় । ছবিটি ১৯৯৩ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
ডাঃ নীহার সেনগুপ্ত (সৌমিত্র) জামশেদপুর থেকে একটি বক্তৃতার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। জামশেদপুর যাওয়ার পথে রাস্তায় কোদালী গ্রামের হলধর গাঁজা খেয়ে বেইস হয়ে পড়ে আছে।হলধরের বাড়িতে আছে বিধবা মেয়ে মানসী (শুভলক্ষ্মী) এবং ছোট পুত্র। মানসীর কৃতজ্ঞতাবোধ তাঁকে মুগ্ধ করে। ডাঃ সেনগুপ্ত হলধরের বাড়ির অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বুঝতে পেরে মানসীকে কলকাতায় এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে নার্সের কাজে যুক্ত হতে অনুরোধ করেন। অন্যদিকে কলকাতার বাইরে গিয়ে বিনা পয়সায় গরিব মানুষের চিকিৎসা করার কথা তিনি ভাবতে শুরু করেন। সমাজ-মনস্ক ডাক্তার হিসেবে তাঁর উত্তরণ ঘটে।
উত্তরণ চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা – জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন নিগম ও দূরদর্শন।
- কাহিনি ও চিত্রনাট্য – সত্যজিৎ রায়।
- পরিচালনা ও সংগীত — সন্দীপ রায়।
- চিত্রগ্রহণ-বরুণ রাহা।
- শিল্প নির্দেশনা – অশোক বসু।
- শব্দগ্রহণ — সুজিত সরকার।
- সম্পাদনা—দুলাল দত্ত।
উত্তরণ চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সাধু মেহের, অনুপ মুখোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, দেবতোষ ঘোষ, শুভলক্ষ্মী, মমতাশঙ্কর।
উত্তরণ চলচ্চিত্রের কাহিনি—
ডাঃ নীহার সেনগুপ্ত (সৌমিত্র) জামশেদপুর থেকে একটি বক্তৃতার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। জামশেদপুরে তাঁর এক পুরোনো বন্ধু (শুভেন্দু) থাকেন, বন্ধুর বাড়িতে তাঁর থাকার কথা। জামশেদপুর যাওয়ার পথে রাস্তায় গাড়ির টায়ার পাল্টাবার সময় ডাক্তার একটা গোঙানির শব্দ শুনতে পান, দেখেন পার্শ্ববর্তী কোদালী গ্রামের হলধর গাঁজা খেয়ে বেইস হয়ে পড়ে আছে।
গ্রামের লোকেদের সাহায্যে ডাক্তার তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান, হলধরের বাড়িতে আছে বিধবা মেয়ে মানসী (শুভলক্ষ্মী) এবং ছোট পুত্র। অভাবের সংসারে সামান্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বিদায় নেওয়ার সময় মানসী তাঁকে তাদের বাড়িতে খেয়ে যেতে অনুরোধ করে। মানসীর কৃতজ্ঞতাবোধ তাঁকে মুগ্ধ করে।
জামশেদপুর পৌঁছে বন্ধুর অনুযোগের সামনে পড়েন। ডাক্তার সেনগুপ্তর বার বার মনে হয় ডাক্তার হিসাবে তিনি ঠিক কাজ করেন নি, মুমূর্ষু রুগিকে এইভাবে ফেলে আসা তাঁর উচিত হয় নি। রাত্রিবেলা তিনি আবার কোদালী গ্রামে হলধরের বাড়ি পৌঁছন এবং দেখেন হলধরের মৃত্যু হয়েছে। মানসী কষ্ট পেলেও শান্ত ভাবে বিষয়টি মেনে নেয়।
ডাঃ সেনগুপ্ত হলধরের বাড়ির অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বুঝতে পেরে মানসীকে কলকাতায় এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে নার্সের কাজে যুক্ত হতে অনুরোধ করেন। যে ডাক্তার সেনগুপ্ত কলকাতায় সচ্ছল লোকেদের চিকিৎসা করতেই অভ্যস্ত ছিলেন কলকাতার বাইরে গিয়ে বিনা পয়সায় গরিব মানুষের চিকিৎসা করার কথা তিনি ভাবতে শুরু করেন। সমাজ-মনস্ক ডাক্তার হিসেবে তাঁর উত্তরণ ঘটে।
ছবিটি ১৯৯৩ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

পুরস্কার :
ছবিটি ১৯৯৩ সালের সেরা চিত্রনাট্যের জন্য জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।
আরও দেখুনঃ