উত্তরা চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি হচ্ছে ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাঙালি কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পরিচালিত বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র। এটি সমরেশ বসুর গল্পের ভিত্তিতে চিত্রিত। জয়া শীল উত্তরা নামে অভিনয় করেন। এছাড়াও তাপস পাল, শঙ্কর চক্রবর্তী এবং রাইসুল ইসলাম আসাদ খ্রিস্টান পাদ্রি হিসেবে অভিনয় করেন।
চলচ্চিত্রটি আপাতদৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ এলাকার মানুষের সহিংসতা, মানবিক পাপ এবং অনাচারকে বৈপরীত্যের মাধ্যমে তুলে ধরেছে। স্থানটি হচ্ছে বাংলার পুরুলিয়া জেলার একটি শান্ত গ্রাম।
উত্তরা চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা- বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত প্রোডাকসন্স।
- কাহিনি – সমরেশ বসু।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা—বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।
- সংগীত পরিচালনা — বিশ্বদেব দাশগুপ্ত।
- চিত্রগ্রহণ—অসীম বসু।
- শিল্প নির্দেশনা—অশোক বসু।
- শব্দগ্রহণ – অনুপ মুখোপাধ্যায়।
- সম্পাদনা — রবিরঞ্জন মৈত্র।
উত্তরা চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
তাপস পাল, শঙ্কর চক্রবর্তী, জয়া শীল।
উত্তরা চলচ্চিত্রের কাহিনি—
গ্রাম বাংলার কোনো এক অখ্যাত রেল ক্রসিংএর পাশে বাস করত সিগন্যাল ম্যান বলরাম (শঙ্কর) এবং গেটম্যান নিমাই (তাপস)। সারাদিন কাজের ফাঁকে তাদের বিনোদনের একমাত্র উপায় ছিল কুস্তি লড়া, দুজনে অবসর পেলেই কুস্তি লড়তে শুরু করত। কাছাকাছি খ্রিস্টান আদিবাসীদের গ্রামের কাছে একটি চার্চের এক পাদ্রি আদিবাসীদের জন্য নিরলস পরিশ্রম করতেন। তার পরিবার বলতে ছিল একটি অনাথ আদিবাসী বালক ম্যাথু।
কাছাকাছির মধ্যে আরও ছিল একটি বেঁটে মানুষদের কলোনী, তারা প্রতিদিন পাহাড়, নদী টপকে অন্য পাড়ে যেত কাজের জন্য। ঐ কলোনীর একজন ট্রেনের গার্ডের কাজ করত। সে স্বপ্ন দেখত একদিন সে আরও উচ্চপদে কাজ করবে এবং তার মতো বেঁটে মানুষেরা একদিন সমাজের মঙ্গলের কাজে নিয়োজিত হবে।

পিসির অসুস্থতার খবর পেয়ে বলরাম গ্রামে যায় এবং পিসির অনুরোধে উত্তরাকে (জয়া) বিয়ে করে তার চাকরির জায়গায় নিয়ে আসে। এক সময় বলরাম ও নিমাইয়ের কুস্তি ছিল। বন্ধুত্বপূর্ণ, উত্তরার উপর বলরামের দখল এই খেলাটিকে আক্রোশের কুস্তিতে পরিণত করে।
একদল হিন্দু উগ্রপন্থী গুণ্ডা চার্চ জ্বালিয়ে দেয় এবং পাদ্রিকে মেরে ফেলে। পাত্রির সাহায্যের জন্য বার বার ডেকেও উত্তরা তাদের সাড়া পায় না, তারা তাদের কুস্তি নিয়ে ব্যস্ত, বরং উত্তরার সাহায্যে এগিয়ে আসে সেই গার্ড। ঐ উগ্রপন্থী গুণ্ডারা উত্তরাকে ধর্ষণ করে খুন করে। এমনকী এই গার্ড উত্তরাকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যায়। ম্যাথু কোনোক্রমে মুখোশ নৃত্যকারীদের সাহায্যে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়, বলরাম আর নিমাই তাদের কুস্তি চালিয়ে যেতে থাকে। ছবিটি ২০০০ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামার নির্বাচিত হয়েছিল।
আরও দেখুনঃ