উৎপলা সেন বিংশ শতাব্দী বাংলা গানের একজন প্রধান গায়িকা। বাঙলা গানের সোনালী যুগে প্রেম এবং বিরহের গানে একটি বিশিষ্ট বিষাদের সুর তিনি ধরেছেন তার গানে। স্বামী সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং অন্য গায়কদের সাথে অনেক জনপ্রিয় ডুয়েটও গেয়েছেন।

উৎপলা সেন । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান
উৎপলা সেনের আদি বাড়ি ঢাকায়, দেশ ভাগের পর কলকাতায় চলে আসেন। ছোটবেলাতেই সংগীত শিক্ষার শুরু মায়ের কাছে, ঢাকায় থাকাকালীন ম্যাট্রিক পাস করেন এবং পরবর্তী কালে কলকাতার কলেজে ভর্তি হন।
চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ নিউ থিয়েটার্স প্রযোজিত হেমচন্দ্র চন্দ্র পরিচালিত হিন্দী ছবি মাই সিস্টার (১৯৪৪) ছবিতে। ছবিটির সংগীত পরিচালনা করেন পঙ্কজকুমার মল্লিক। বাংলা ছবিতে নেপথ্য সংগীত শিল্পী হিসাবে প্রথম কাজ বিমল রায় পরিচালিত অঞ্জনগড় (১৯৪৮)। এই ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল।
সমগ্র চলচ্চিত্র জীবনে মাত্র ২৫টি ছবিতে নেপথ্য সংগীত শিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন কালীপদ সেন, নচিকেতা ঘোষ, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, রবীন চট্টোপাধ্যায়, অনিল বাগচী, গোপেন মল্লিক, তিমিরবরণ, আলী আকবর খান, ভূপেন হাজারিকা প্রভৃতি সংগীত পরিচালকের সাথে।
প্রণব রায়, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, অনিল ভট্টাচার্য প্রভৃতি গীতিকারের লেখা গান ছাড়াও চলচ্চিত্রে তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীতও ব্যবহৃত হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর স্বামী। উৎপলা বাংলা ছাড়াও বহু হিন্দী ছবিতে নেপথ্য সংগীতশিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন।

চলচ্চিত্রপঞ্জি—
১৯৪৮ : অঞ্জনগড়, ১৯৫৩ : বউঠাকুরাণীর হাট; ১৯৫৪ : বিক্রম উব্বশী, জয়দেব; ১৯৫৫ কথা কও, কালিন্দী: ১৯৫৬ সাগরিকা, মহাকবি গিরিশচন্দ্র, ছায়া সঙ্গিনী, দানের মর্য্যাদা, মা; ১৯৫৭: মাথুর, ওষ্কারের জয়যাত্রা, জীবন তৃষ্ণা; ১৯৫৯ বিচারক; ১৯৬০ : সুরের পিয়াসী; ১৯৬২ : খনা; ১৯৬৩ : এক টুকরো আগুন; ১৯৬৪ : রাধাকৃষ্ণ; ১৯৬৫ : ও কে; ১৯৬৬ : মায়াবিনী লেন; ১৯৭২ : বিগলিত করুণা জাহ্নবী যমুনা; ১৯৭৩ : বনপলাশির পদাবলী, ১৯৭৬ : মোমবাতি; ১৯৭৯ : আমি রতন।