কমল দাশগুপ্ত ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী, প্রসিদ্ধ সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। ত্রিশ এবং চল্লিশের দশকে গ্রামোফোন ডিস্কে তার সুরে গাওয়া বহু গান অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। গানগুলোর গীতিকার ছিলেন প্রণব রায় এবং কণ্ঠশিল্পী ছিলেন যুথিকা রায়। সাঁঝের তারকা আমি, আমি ভোরের যুথিকা প্রভৃতি গান আজও সমাদৃত। তার কয়েকটি রাগাশ্রিত, কীর্তনাঙ্গ এবং ছন্দ-প্রধান গানও সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
কমল দাশগুপ্ত
জন্ম পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) ঢাকায়। শৈশবকালে বড় ভাই অধ্যাপক বিমল দাশগুপ্তের কাছে খেয়াল গান দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন। ডি. এল. রায়ের পুত্র দিলীপ রায়, কৃষ্ণচন্দ্র দে (কানা কেষ্ট) এবং ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খাঁর কাছে খেয়াল, ঠুমরী, দাদরা ও গজলের তালিম গ্রহণ করেন তিনি।
বিগত শতকের তিরিশের দশকের প্রথম ভাগে তাঁর দেওয়া সুরে গান রেকর্ড করেন যূথিকা রায়। চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ কালী ফিল্মস প্রযোজিত এবং সতু সেন পরিচালিত পণ্ডিতমশাই (১৯৩৬) ছবিতে। পরবর্তী কালে প্রমথেশ বড়ুয়া, নীরেন লাহিড়ী, ফণী বর্মা, সুশীল মজুমদার, প্রেমেন্দ্র মিত্র, দেবকী বসু, সুকুমার দাশগুপ্ত প্রভৃতি চলচ্চিত্রকারের ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন।

বাংলা চলচ্চিত্রের সুরকার হিসেবেও প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন কমল দাশগুপ্ত। তুফান মেল, শ্যামলের প্রেম, এই কি গো শেষ দান—চলচ্চিত্রসমূহের গানগুলো এককালে বিপুল সাড়া তুলেছিল। ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছবিতে তার সুরসৃষ্টি স্মরণীয়। সঙ্গীত-পরিচালক হিসেবে তার শেষ ছবি ছিল বধূবরণ। প্রায় আশিটি ছায়াছবির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তিনি।
প্রণব রায়ের সাথে যুগ্ম ভাবে প্রযোজনা করেছেন প্রার্থনা (১৯৫২) ছবিটি। তাঁর সংগীত পরিচালনায় শেষ ছবি বধূবরণ ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায়। ছবিটির পরিচালক ছিলেন দিলীপ নাগ। বাংলা ছাড়াও হিন্দী ছবিতেও সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন।
চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৩৬ পণ্ডিতমশাই,
- ১৯৩৮ সৰ্ব্বজনীন বিবাহোৎসব;
- ১৯৩৯ দেবযানী,
- ১৯৪২ গরমিল, শেষ উত্তর,
- ১৯৪৩ সহধর্মিণী, যোগাযোগ, দম্পতি,
- ১৯৪৪ বিদেশিনী, নন্দিতা,
- ১৯৪৫ ভাবীকাল,
- ১৯৪৭ চন্দ্রশেখর;
- ১৯৪৮: জয়যাত্রা,
- ১৯৪১ রাঙামাটি, অনুরাধা,
- ১৯৫২ প্রার্থনা;
- ১৯৫৩ মালঞ্চ, ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য,
- ১৯৫৪ নববিধান,
- ১৯৫৫ ১৯৬৭ বধূবরণ। ব্রতচারিণী,
- ১৯৫৬ মানরক্ষা, গোবিন্দদাস
- ১৯৫৭ মধুমালতী;
আরও দেখুনঃ