কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্র

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্রটি ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় বাংলা নাট্য চলচ্চিত্র। ছবিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত। এই ছবির পরিচালক ছিলেন তপন সিংহ।

রহমত একজন মধ্যবয়সী আফগান ফল বিক্রেতা। সে ফল বিক্রি করতে কলকাতায় আসে। সেখানে মিনি নামে একটি ছোটো বাঙালি মেয়ের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। মিনিকে দেখে তার নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে যায়।

একদিন রহমত এক চিঠিতে তার মেয়ের অসুস্থতার খবর পায়। সে ঠিক করে দেশে ফিরে যাবে। তার টাকার অভাব থাকায় সে ঠিক করে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ধারে জিনিস বিক্রি করবে। পরে টাকা আদায় করতে গেলে লোকটি তাকে অপমান করতে থাকলে রহমত তাকে ছুরি মেরে বসে। তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার দিন রহমত মিনির সঙ্গে দেখা করতে যায়। মিনি তাকে চিনতে পারে না। রহমত বুঝতে পারে, তার মেয়েও নিশ্চয় তাকে ভুলে গিয়েছে। মিনির বাবা মিনির বিয়ের খরচের টাকা থেকে রহমতকে দেশে ফিরে যাওয়ার টাকা দেন আর রহমতের মেয়ের জন্য একটি উপহার পাঠান।

 

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্র

  • প্রযোজনা — চারুচিত্র।
  • কাহিনি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
  • চিত্রনাট্য ও পরিচালনা — তপন সিংহ।
  • অতিরিক্ত সংলাপ– প্রেমেন্দ্র মিত্র।
  • সংগীত পরিচালনা — রবিশঙ্কর।
  • চিত্রগ্রহণ – অনিল বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • শিল্প নির্দেশনা – সুনীতি মিত্র।
  • সম্পাদনা— সুবোধ রায়।
  • শব্দগ্রহণ — মণি বসু, অতুল চট্টোপাধ্যায়।
  • গীতিকার — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
  • রবীন্দ্র সংগীত পরিচালনা — সুচিত্রা মিত্র, দ্বিজেন চৌধুরী।
  • নেপথ্য সংগীত— দেবযানী সেন, বনশ্রী মুখোপাধ্যায়, মালবিকা চৌধুরী, শুক্লা সেন।

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —

ছবি বিশ্বাস, টিঙ্কু ঠাকুর, রাধামোহন ভট্টাচার্য, মঞ্জু দে, শ্রাবণী চৌধুরী, জীবেন বসু, জহর রায়, কালী বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্রের কাহিনি—

সুদূর আফগানিস্তান থেকে কলকাতায় এসে কাজু, কিসমিস, পেস্তা ফেরি করে রহমত (ছবি)। কলকাতায় তার পরিচয় সে একজন কাবুলিওয়ালা। রহমতের সাথে অসমবয়সি বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে মিনির (টিংকু)। ছোট্ট মেয়ে মিনির বাবা (রাধামোহন) ও মা (মঞ্জু) প্রথমে রহমতকে সন্দেহের চোখে দেখলেও পরে তার সহৃদয়তায় মুগ্ধ হন।

বাড়িওয়ালার সাথে ঝামেলায় একটি মারামারিতে অভিযুক্ত হয়ে রহমতের আট বছরের জেল হয়। জেল থেকে ফিরে রহমত মিনির সাথে দেখা করতে যায়। সেদিন মিনির বিয়ে। মিনিকে দেখে রহমতের তার ছোট্ট মেয়ে রাবেয়াকে মনে পড়ে, রাবেয়াও আজ বিয়ের বয়সি। মিনির বাবা ও মা রহমতের পিতৃহৃদয়ের যন্ত্রণাকে উপলব্ধি করেন, এবং বিয়ের উৎসবের কিছু কাটছাট করে রহমতের হাতে দেশে ফেরার টাকা তুলে দেন।

ছবিতে নাম ভূমিকায় ছবি বিশ্বাসের অভিনয় এবং রবিশঙ্করের সংগীত ছবিটির সম্পদ। এই ছবি তপন সিংহকে বাংলাদেশের অগ্রণী পরিচালকদের সাথে একই আসনে বসিয়ে দেয়।

 

Google News কাবুলিওয়ালা চলচ্চিত্র
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

পুরস্কার

১৯৫৭ সালে ৭ম বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবিটির সংগীত পরিচালনার জন্য রবিশঙ্কর রৌপ্য ভল্লুক লাভ করেন। ১৯৫৬ সালের শ্রেষ্ঠ ছবি হিসাবে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক এবং আঞ্চলিক ভাষা (বাংলা) শ্রেষ্ঠ ছবি হিসাবে রৌপ্য পদক লাভ করে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment