গঙ্গাপদ বসুর জন্ম পূর্ববঙ্গে (অধুনা বাংলাদেশের) যশোহর জেলায়। প্রথাগত শিক্ষা শুরু হয় নাড়াইল স্কুলে, পরে নাড়াইল কলেজ থেকে আই.এ. পাস করেন। কলেজ জীবন থেকেই নাট্যাভিনয় শুরু করেন। প্রধানত নাট্য ব্যক্তিত্ব গঙ্গাপদ বসু নাটক লেখার পাশাপাশি নাট্য বিষয়ে বহু প্রবন্ধ রচনা করেছেন।
গঙ্গাপদ বসু
প্রথম চলচ্চিত্রাভিনয় মনোজ ভট্টাচার্য পরিচালিত তথাপি (১৯৫০) ছবিতে। চলচ্চিত্র জীবনে ৮০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ছাড়াও মধু বসু, নীরেন লাহিড়ী, দেবনারায়ণ গুপ্ত, প্রফুল্ল রায়, দেবকী বসু, সত্যেন বসু, সুধীর মুখোপাধ্যায়, অজয় কর, অগ্রদূত, অগ্রগামী প্রভৃতি পরিচালকের সাথে কাজ করেছেন। উল্লেখযোগ্য অভিনয় উদ্বাস্তু নেতা (ছিন্নমূল, ১৯৫১), কিচলু (পরশপাথর, ১৯৫৮), মহিম (জলসাঘর, ১৯৫৮), মেয়ে পাচারের আড়কাঠি (নিশিপদ্ম, ১৯৭০) প্রভৃতি। বহু ছবিতেই খলনায়কের চরিত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অভিনয় লক্ষ করা যায়। হাস্যকৌতুক অভিনয়েও তাঁর পারদর্শিতা ছিল।
কলেজ জীবন থেকেই নাটকে আগ্রহী গঙ্গাপদ বসু চল্লিশের দশকে গণনাট্য সংঘের সাথে যুক্ত হন। পরবর্তী কালে বহুরূপী নাট্যগোষ্ঠীর তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বহুরূপীর প্রযোজিত বহু নাটকেই তিনি নিয়মিত অভিনয় করতেন। পরবর্তী কালে এই গোষ্ঠীর সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। পেশাদার রঙ্গমঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক রচনাও করেছেন। তাঁর লেখার নির্বাচিত সংকলন গ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে।

চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৫০ তথাপি,
- ১৯৫১ ছিন্নমূল,
- ১৯৫২ স্বপ্ন ও সমাধি:
- ১৯৫৩ মুস্কিল আসান, পথিক, ভোর হয়ে এলো, রাখী, চণ্ডীদাস, মালঞ্চ,
- ১৯৫৪ আজ সন্ধ্যায়, নববিধান, ষোড়শী,
- ১৯৫৫ নিষিদ্ধ ফল, শ্রীবৎসচিন্তা, দেবত্র, শাপমোচন, পরেশ, দৃষ্টি, ছোট বৌ:
- ১৯৫৬ ভাদুড়ীমশাই, আশা, একদিন রাত্রে, মদনমোহন, মহাকবি গিরিশচন্দ্র,
- ১৯৫৭ পৃথিবী আমারে চায়, আমি বড় হবো, দাতা কর্ণ,
- ১৯৫৮ পরশপাথর, ডাক হরকরা, অযান্ত্রিক, ডাক্তারবাবু, সূর্যতোরণ, জলসাঘর, ইন্দ্রাণী, নাগিনী কন্যার কাহিনী,
- ১৯৫৯ শশীবাবুর সংসার, কিছুক্ষণ, হেডমাষ্টার, অবাক পৃথিবী, শুভ বিবাহ, লালু ভুলু,
- ১৯৬০ রাজাসাজা, কুহক, প্রবেশ নিষেধ, ত্রৈলঙ্গস্বামী, কোন একদিন, শুন বরনারী;
- ১৯৬১ ক্ষণিকের অতিথি, ডাইনি, আহ্বান, বিষকন্যা,
- ১৯৬২ তরণীসেন বধ, অগ্নিশিখা, কাজল, দাদাঠাকুর, বর্ণচোরা, হাসি শুধু হাসি নয়, সূর্য্যশিখা, নিশীথে, কাঞ্চনকন্যা, পলাতক: ১৯৬৪ বিভাস, বীরেশ্বর বিবেকানন্দ, কষ্টিপাথর, কাঞ্চনরঙ্গ,
- ১৯৬৫ মুখুজ্যে পরিবার:
- ১৯৬৬ মণিহার, নতুন জীবন, শুধু একটি বছর,
- ১৯৬৭ দেবীতীর্থ কামরূপ কামাখ্যা, ৮০’তে আসিও না,
- ১৯৬৮ বালুচরী, জীবন সংগীত, বিবাহ বিভ্রাট;
- ১৯৬৯ পিতাপুত্ৰ,
- ১৯৭০ মুক্তিস্নান, শীলা, নিশিপদ্ম, নল দময়ন্তী:
- ১৯৭১ এখানে পিঞ্জর,
- ১৯৭২ জনতার আদালত, অপর্ণা,
- ১৯৭৪ শ্রাবণ সন্ধ্যা:
- ১৯৭৭ নাগরিক, শ্রীশ্রী মালক্ষ্মী।
আরও দেখুনঃ