গিরিবালা চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। চলচ্চিত্রটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মধু বসু। গোপীনাথ (ধীরাজ) বাবা-মার উচ্ছন্নে যাওয়া সন্তান। তার স্ত্রী গিরিবালা থাকা সত্ত্বেও সে অভিনেত্রী লবঙ্গকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। অপমানিতা গিরিবালা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য থিয়েটারের অভিনেত্রীর জীবন বেছে নেয় , তার নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
গিরিবালা চলচ্চিত্র
প্রথম ইউরোপ সফর শেষে দেশে ফেরার পর চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ প্রবলভাবে জড়িয়ে পড়েন। কাহিনিকার, গীতিকার, চিত্রনাট্য, সংলাপ রচয়িতা এবং পরিচালক হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করেন এক ভিন্নমাত্রায়। তারই একপর্যায়ে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিউ থিয়েটার্সের ‘নটির পূজা’ ছবিটি রবীন্দ্রনাথ পরিচালনা করেন। ১৯৩০ সালে নির্মিত মিঠু বসুর ‘গিরিবালা’ ছবিটি নির্মাণকাজে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। এ ছবির এক্সটাইটেল রবীন্দ্রনাথ নিজে রচনা করেন। পরে জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে রবীন্দ্রনাথ নিজের গল্প ‘ডালিয়া’ ও উপন্যাস ‘রাজর্ষি’ দুটো মিলিয়ে একটি চিত্রনাট্য রচনা করেন।
- প্রযোজনা ম্যাডান থিয়েটার্স।
- কাহিনি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা – মধু বসু।
- চিত্রগ্রহণ – যতীন দাস।
গিরিবালা চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
ধীরাজ ভট্টাচার্য, নরেশচন্দ্র মিত্র, তিনকড়ি চক্রবর্তী, লীলাবতী দেবী, শান্তি গুপ্তা, ললিতা দেবী।
গিরিবালা চলচ্চিত্রের কাহিনি—
গোপীনাথ (ধীরাজ) বাবা-মার উচ্ছন্নে যাওয়া সন্তান। সংসারে পতিব্রতা স্ত্রী গিরিবালা (ললিতা) থাকা সত্ত্বেও সে বাড়ির বাইরে রাত কাটায় এবং ইয়ারবক্সি (নরেশ) নিয়ে থিয়েটারের অভিনেত্রীদের সঙ্গে মত্ত। বাবার মৃত্যুর পর অগাধ সম্পত্তির মালিক হয়ে গোপীনাথ অভিনেত্রী লবঙ্গকে (শান্তি) নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। অপমানিতা গিরিবালা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য থিয়েটারের অভিনেত্রীর জীবন বেছে নেয়।
ক্রমশ তার অভিনয়ের দক্ষতায় এবং সৌন্দর্যে সে থিয়েটারের নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পায়। অভিনেত্রী হিসাবে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। লম্পট গোপীনাথ নতুন নায়িকাকে দেখার জন্য থিয়েটারে এসে নায়িকার ভূমিকায় নিজের স্ত্রীকে চিনতে পারে। নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়েই বাড়ির স্ত্রীর থিয়েটারে অভিনয় করার জন্য শাস্তি দিতে ছুরি নিয়ে তার উপর চড়াও হলেও স্ত্রীকে মারতে ব্যর্থ হয় এবং পুলিস গোপীনাথকে ধরে নিয়ে যায়।

ধীরাজ ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী মূলক লেখা ‘যখন নায়ক ছিলাম’ গ্রন্থে এই ছবির আলোচনা থেকে জানা যায় ‘চিত্রনাট্য তৈরি’ এবং শুটিংএর সময় ‘রিফ্লেকটার ব্যবহার’ বাংলা ছবির ক্ষেত্রে প্রথম এই ছবিতেই হয়েছিল।
আরও দেখুনঃ