ছেঁড়া তমসুক চলচ্চিত্র ১৯৭৪ সালে সমরেশ বসুর কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত তার চলচ্চিত্রটি একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছিল।
ছেঁড়া তমসুক চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান
- প্রযোজনা -পিকস্ প্রযোজক প্রবীর দাশগুপ্ত।
- কাহিনি – সমরেশ বসু।
- চিত্রনাটা, সংগীত, শিল্প নির্দেশনা ও পরিচালনা – পূর্ণেন্দু পত্রী।
- চিত্রগ্রহণ শক্তি বন্দ্যোপাধ্যায়।
- শব্দগ্রহণ বলরাম বারুই, অনিল দাশগুপ্ত।
- সম্পাদনা – অরবিন্দ ভট্টাচার্য।
- গীতরচনা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
অভিনয়-
রঞ্জিত মল্লিক, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়, শ্যামল সেন, নিমু ভৌমিক, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, বিভাস চক্রবর্তী, প্রমোদ গঙ্গোপাধ্যায়, অর্জুন মুখোপাধ্যায়, গোপা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভজিৎ নাথ, নীলকণ্ঠ সেনগুপ্ত। কণ্ঠ সংগীত — কুমকুম চট্টোপাধ্যায়।
কাহিনি—
প্রভাত, শঙ্কর, নরেশ (শ্যামল, নিমু, বিপ্লব) তিন বন্ধু কলেজের পড়া ছেড়ে চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এখন ওদের উপার্জনের একমাত্র উপায় ওয়াগন ভেঙে মালপত্র চুরি করা। একদিন আড্ডা মারার সময় ওরা ওদের কলেজের সহপাঠিনী বিজলীর (সুমিত্রা) দেখা পায়। অভাবের কারণে কলেজের পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এক সময় বিজলীর সাথে ব্রজেনের (রঞ্জিত) প্রেমের সম্পর্ক ছিল, ব্রজেন বিভিন্ন ভাবে বিজলীকে আর্থিক সাহায্যও করত। কোনো অজ্ঞাত কারণে বিজলী ও ব্রজেনের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
টিউশনি করে ফেরার পথে বিজলীর সাথে প্রভাত, শঙ্কর, নরেশদের এখন প্রায়ই দেখা হয়। কিছুক্ষণ আড্ডার পর বিজলী বাড়ি ফিরে যায়। অভাবের সংসারে বিজলীদের ঘরভাড়া বাকি পড়ে, বাড়িওয়ালার নিত্য তাগাদায় বিজলীর বাবা তাকে সাহায্যের জন্য ব্রজেনের কাছে যেতে বলে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিজলী ব্রজেনের কাছে হাত পাতে। ব্রজেন সুযোগটিকে কাজে লাগায়।
একদিন তিন বন্ধু খবর পায় বিজলী আত্মহত্যা করেছে এবং আত্মহত্যার সময় বিজলী ছিল গর্ভবর্তী। তিন বন্ধু পরস্পরকে সন্দেহ করতে শুরু করে। তারা নিজেদের কাছে স্বীকার করে বিজলীর এই অবস্থার জন্য তিনজনের কেউই দায়ী নয়। তাদের সন্দেহ হয় রঘুকে। একদিন রঘুর খোঁজে যাওয়ার বিজলী যেখানে আত্মহত্যা করেছে সেখানে ব্রজেনকে দেখতে পায়। তারা সবাই ব্রজেনকে চেপে ধরে এবং ব্রজেন স্বীকার করে যে তার অন্যায় আচরণের কারণেই বিজলী আত্মহত্যা করেছে। অনুতপ্ত ব্রজেনকে প্রথমে তারা মারার কথাই ভেবেছিল কিন্তু যখন দেখল বিজলীর মৃত্যুতে ব্রজেন তাদের মতোই কষ্ট পাচ্ছে তখন তারা বিস্মিত হয়।

একজন শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা এই ছবির প্রতিটি দৃশ্যে ফুটে ওঠে – দারিদ্রের বিরুদ্ধে মেয়েদের সংগ্রাম, কাজ না পেয়ে বেকার যুবকদের অনৈতিক পথে পা বাড়ানো এবং মেয়ের চরিত্র নষ্ট হতে পারে জেনেও মধ্যবিত্ত মানসিকতার পিতার কন্যাকে অর্থ উপার্জনের জন্য পাঠানো সে সবই অত্যন্ত সংযমের সাথে ছবিতে দেখানো হয়েছে।
আরও দেখুনঃ