জনআরণ্য চলচ্চিত্র

জনআরণ্য চলচ্চিত্র (ইংরেজি: The Middleman), ১৯৭৬ সালে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত বাংলা চলচ্চিত্র। এটি মণিশংকর মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস জন্য অরণ্য অবলম্বনে চিত্রায়িত। এটি সত্যজিৎ রায়ের কলকাতা ত্রয়ী সিরিজের ৩য় চলচ্চিত্র। আগের দুটি চলচ্চিত্র হলো – প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০) এবং সীমাবদ্ধ (১৯৭১)।

 

জনআরণ্য চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

জনআরণ্য চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

  • প্রযোজনা — ইন্ডাস ফিল্মস (সুবীর গুছ)।
  • কাহিনি শংকর।
  • চিত্রনাট্য, সংগীত ও পরিচালনা – সত্যজিৎ রায়।
  • চিত্রগ্রহণ – সৌমেন্দু রায়।
  • শিল্প নির্দেশনা অশোক বসু।
  • সম্পাদনা – দুলাল দত্ত
  • শব্দগ্রহণ – জে.ডি. ইরানী, অনিল তালুকদার, সুজিত ঘোষ, মঙ্গেশ দেশাই, সমীর মজুমদার।
  • কণ্ঠ সংগীত – শর্মিলা রায়, অমিত রায় ও সম্প্রদায়।

 

অভিনয় :

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় (PLT), লিলি চক্রবর্তী, রবি ঘোষ, উৎপল দত্ত, গৌতম চক্রবর্তী, আরতি ভট্টাচার্য, পদ্মা দেবী, সুদেষ্ণা দাস, শোভন লাহিড়ী, বিমল চট্টোপাধ্যায়, অলোকেন্দু দে, সন্তোষ দত্ত, বিমল দেব, অজয় মুখোপাধ্যায়, কল্যাণ সেন, অপর্ণা সেন।

 

জনআরণ্য চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

কাহিনি:

এই কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র সোমনাথ ব্যানার্জী (প্রদীপ) মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন বেকার যুবক। বি.এ. পরীক্ষায় তার অনার্স কাটা যায় পরীক্ষকের গাফিলতিতে। বহু চেষ্টা করেও সোমনাথ কোনো চাকরি জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। বড়বাজারে তার সাথে পরিচয় হয় বিশুদার (উৎপল), তাঁর পরামর্শে সোমনাথ ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাবার (সত্য) অনুমতি নিয়ে সোমনাথ ব্যবসা শুরু করে, বিশুদার মাধ্যমে তার পরিচয় হয় মিঃ আদকের (বিমল) সাথে। মিঃ আদকের যোগাযোগের সূত্রে ব্যবসা থেকে সোমনাথ প্রথম রোজগার শুরু করে। সোমনাথ তার বাল্যবন্ধু সুকুমারের (গৌতম) সাথে দেখা করে, অবস্থা বিপর্যয়ে সুকুমার সপরিবারে এখন বস্তিতে বাস করতে বাধ্য হচ্ছে, সুকুমারের বোন কণার (সুদেষ্ণা) সামান্য রোজগারে তাদের সংসার চলে।

কেমিকেলের অর্ডার পাওয়ার আশায় সোমনাথ একটি কাপড়ের মিলের পারচেজিং অধিকর্তা মিস্টার গোয়েঙ্কার (শোভন) সাথে দেখা করেও ব্যর্থ হয়। সোমনাথ জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ নটবর মিত্রর (রবি) শরণাপন্ন হয়। নটবর খোঁজ নিয়ে জানায় গোয়েঙ্কাকে মহিলা সাপ্লাই করতে পারলে অর্ডার পাওয়া সম্ভব হবে।

 

জনআরণ্য চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

প্রথমে কিছুটা দোলাচলে ভুগলেও সোমনাথ ভাড়াটে মেয়ের খোঁজে বেরোয়, শেষ পর্যন্ত নটবরের চেষ্টায় একটি টেলিফোন অপারেটিং স্কুলে একটি মেয়ের খোঁজ পায়, মেয়েটির নাম যুথিকা। যুথিকা টাকার বিনিময়ে লোকেদের প্রয়োজনীয় সঙ্গ দিয়ে থাকে। যুথিকাকে টেলিফোন অপারেটিং স্কুল থেকে আনতে গিয়ে সোমনাথ সবিস্ময়ে লক্ষ করে যুথিকা আর কেউ নয়, তার বাল্যবন্ধু সুকুমারের বোন কণা।

সোমনাথ কণাকে নিয়ে গোয়েঙ্কার কাছে যেতে না চাইলেও যূথিকার চাপে যেতে বাধ্য হয়। সোমনাথ না চাইলেও যুথিকাকে গোয়েঙ্কার কাছে পৌঁছে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে সার্থক ব্যবসায়ী হিসাবে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়, ব্যবসায়ীর কাছে ন্যায়-অন্যায়-বিবেক ইত্যাদি অপেক্ষা টাকা রোজগারটাই আসল। এই ছবি সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন ‘জন অরণ্য” সত্যজিৎ রায়ের প্রথম প্রতিবাদের ছবি।

 

Google News জনআরণ্য চলচ্চিত্র
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

পুরস্কার:

ছবিটি ১৯৭৫ সালে সেরা পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

 

প্রকাশনা:

ছবির চিত্রনাট্য ১৯৭৫ সালে এক্ষণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment