জামশেদজী ফ্রেমজী ম্যাডান ছিলেন এক পার্শী ব্যবসায়ী এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের একজন পথিকৃৎ। জন্ম বোম্বেতে একটি পার্শি পরিবারে। পরিবারের কয়েকজন থিয়েটার ব্যবসায় যুক্ত থাকার সুবাদে জামশেনডী বোম্বের ভিক্টোরিয়া থিয়েট্রিক্যাল ক্লাবে থিয়েটার অভিনেতা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। সালের মধ্যে জামশেদজী বোম্বেতে এলফিনস্টোন’ এবং ‘খাটাউ আলফ্রেড নামে দুটি থিয়েটার কোম্পানির মালিকানা লাভ করেন। ১৯০২ সাল নাগাদ তিনি বোম্বে ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন এবং জে. এফ ম্যাডান এন্ড সন্স নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে।
জামশেদজী ফ্রেমজী ম্যাডান
১৯০২ সালে, কলকাতার ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে তিনি বায়োস্কোপ শো দেখানো শুরু করেন। একইসঙ্গে করিন্থিয়ান থিয়েটারেও একইরকম শো শুরু করেন।
থিয়েটার ব্যবসার সাথে সাথে ওষুধ ও মদের ব্যবসাও শুরু করেন। এই সময় থেকেই তিনি চলচ্চিত্র ব্যবসার সাথেও যুক্ত হন। কলকাতা ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু করেন। পরে চলচ্চিত্র নির্মাণেও অর্থ বিনিয়োগ করেন। ১৯০৫ সালে জ্যোতিষচন্দ্র সরকারের তোলা বাংলাভাগের উপর তথ্যচিত্রটি তাঁর আর্থিক সহায়তায় তোলা হয়েছিল।
১৯০৭ সালে তিনি কলকাতার প্রথম স্থায়ী শো হাউস প্রতিষ্ঠা করেন ‘এলফিনস্টোন পিক্চার প্যালেস’, যা আজকাল ‘চ্যাপলিন সিনেমা’ নামে পরিচিত। এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ম্যাডান থিয়েটার আর ‘প্যালেস অফ্ ভ্যারাইটিস’ (যা আজকাল ‘এলিট সিনেমা’ নামে পরিচিত)।
ম্যাডান প্রতিষ্ঠিত জে. এফ. ম্যাডান এন্ড কোঃ পরবর্তী কালে ম্যাডান থিয়েটার্স নামে জয়েন্টস্টক কোম্পানিতে পরিণত হয়। ম্যাডান থিয়েটার্সের অধীনস্ত এলফিনস্টোন বায়োস্কোপ কোম্পানি অবিভক্ত বাংলায় প্রথম কাহিনিচিত্র ‘সত্যবাদী রাজা হরিশ্চন্দ্র’ (১৯১৭) প্রযোজনা করে। এলফিনস্টোন প্রযোজিত বিশ্বমঙ্গল বা ভক্ত সুরদাস (১৯১৯) ছবিটি ম্যাডান থিয়েটার্স লিঃএর পরিচালনায় নির্মিত হয়।

নির্বাক যুগে জামশেদজী প্রতিষ্ঠিত ম্যাডান থিয়েটার্স ভারতের চলচ্চিত্র ব্যবসায়ের অর্ধেকেরও বেশি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল, ভারতবর্ষ ছাড়াও তাদের ব্যবসা বর্মা ও সিংহলে প্রসারিত হয়। ১৯২৩ সালে আমদেশজীর মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র ব্যবসার কাজ তাঁর তৃতীয় পুত্র জিজিবয় জামশেদর্জী ম্যাডানের কর্তৃত্বে পরিচালিত হতে থাকে।
আরও দেখুনঃ