দিবারাত্রির কাব্য চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমদের আজকের আলোচনা- যা পরিচালনা করেছেন বিমল ভৌমিক। চলচ্চিত্রটিতে বসন্ত চৌধুরী, মাধবী চক্রবর্তী, অঞ্জনা ভৌমিক, স্বপন রায়, অনুভা গুপ্তা, কানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত অভিনয় করেছেন।
গল্পটি যুক্তিবাদী এবং নিরাসক্ত প্রকৃতির মানুষ হেরম্বকে নিয়ে। হেরম্বের স্ত্রী তার বিবাহপূর্ব প্রেমের কথা জানতে পেরে আত্মহত্যা করে। সুপ্রিয়া হেরম্বকে ভালোবাসত। হেরম্ব তাকে কথা দেয় ছ মাস বাদে সে আবার এসে এই বিষয়ে কথা বলবে। হেরম্ব আসে পুরীতে, সেখানে আলাপ হয় মাস্টার মশায়ের মেয়ে আনন্দীর (অল্পনা) সাথে। হেরম্ব আনন্দীর প্রেমে পড়ে। আনন্দী হেরম্বকে মন্দিরের দেবতার সামনে ‘চন্দ্রকলা’ নাচ দেখায়। এই নাচ নাচতে নাচতে আনন্দী অগ্নিকুণ্ডের উপর পড়ে যায়, হেরম্ব নিশ্চল হয়ে বসে থাকে।
দিবারাত্রির কাব্য চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা – নাবিক প্রোডাকসন্স।
- কাহিনি – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
- চিত্রনাট্য — বিমল ভৌমিক।
- পরিচালনা – বিমল ভৌমিক।
- সংগীত পরিচালনা তিমিরবরন।
- গীতিকার – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি
- চিত্রগ্রহণ – কৃষ্ণ চক্রবর্তী।
- শিল্প নির্দেশনারী ঠাকুর, রামচন্দ্র সিঙ্গে।
- শব্দগ্রহণ অতুল চট্টোপাধ্যায়, সুনীল ঘোষ, অনিল দাশগুপ্ত, শ্যামসুন্দর ঘোষ।
- সম্পাদনা—সন্তোষ গঙ্গোপাধ্যায়।
দিবারাত্রির কাব্য চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
বসন্ত চৌধুরী, মাধবী চক্রবর্তী, অঞ্জনা ভৌমিক, স্বপন রায়, অনুভা গুপ্তা, কানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, গোবিন্দ ঘোষ, মাখন বিশ্বাস, বিশ্বনাথ সরকার, মিহির পাল, সন্তোষ বসু।
নেপথ্য কণ্ঠ—
প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুমিত্রা সেন।
দিবারাত্রির কাব্য চলচ্চিত্রের কাহিনি—
হেরম্ব (বসন্ত) যুক্তিবাদী এবং নিরাসক্ত প্রকৃতির মানুষ। সে রাঁচিতে একটি স্কুলে মাস্টারি করে, বয়স তিরিশের কিছু বেশি। তার স্ত্রী তার বিবাহপূর্ব প্রেমের কথা জানতে পেরে আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর মৃত্যুর দেড় বছর পর হেরম্ব সুপ্রিয়ার সাথে দেখা করতে যায়। ছ বছর আগে সুপ্রিয়ার (মাধবী) সাথে বিয়ে হয়েছিল রূপাইকুড়া গ্রামের ছোট দারোগা অশোকের (স্বপন)।
সুপ্রিয়া হেরম্বকে ভালোবাসত, হেরম্বই তাকে বুঝিয়ে এই বিয়েতে রাজি করায়। বিয়ের পর ছবছর কেটে গেলেও হেরম্বর প্রতি সুপ্রিয়ার ভালোবাসা এখনও অটুট। সে হেরম্বর সাথে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চায়। হেরম্ব তাকে কথা দেয় ছ মাস বাদে সে আবার এসে এই বিষয়ে কথা বলবে।
রূপাইকুড়া থেকে হেরম্ব আসে পুরীতে, সেখানে তার মাস্টারমশাই অনাথ (কানু) এবং তাঁর স্ত্রী মালতি বৌদি (অনুভা) থাকেন। আলাপ হয় মাস্টার মশায়ের মেয়ে আনন্দীর (অল্পনা) সাথে। হেরম্ব আনন্দীর প্রেমে পড়ে।
সুপ্রিয়া অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পুরীতে আসে, সেখানে হেরম্ব, মালতী ও আনন্দীর সাথে তার দেখা হয়, সে আনন্দী ও হেরম্বর প্রেমের সম্পর্ক বুঝতে পারে। হেরম্বকে ছাড়তে সুপ্রিয়া রাজি নয়। হেরম্ব তাকে স্বামী অশোকের কাছে ফিরে যেতে বলে। অনাথ শুধু আনন্দীকে জানিয়ে চুপি চুপি বাড়ি থেকে চলে যায়।
মালতী হেরম্বর কাছ থেকে আনন্দীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি আদায় করে স্বামীর খোঁজে গৃহত্যাগ করে। আনন্দী হেরম্বকে মন্দিরের দেবতার সামনে ‘চন্দ্রকলা’ নাচ দেখায়। সম্পূর্ণ নিরাবরণ, নিরাভরণ হয়ে এই নাচ নাচতে নাচতে আনন্দী অগ্নিকুণ্ডের উপর পড়ে যায়, হেরম্ব নিশ্চল হয়ে বসে থাকে।

পুরস্কার—
১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষায় নির্মিত শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র হিসাবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।
মাধবী চক্রবর্তী বছরের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে জাতীয় পুরস্কার ‘উর্বশী’ পান।
আরও দেখুনঃ