অতুলপ্রসাদ সেন ছিলেন ব্রিটিশ ভারতবর্ষে ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবির্ভুত একজন বিশিষ্ট বাঙালি গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তিনি একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতবিদও ছিলেন।
অতুলপ্রসাদ সেন
অতুলপ্রসাদ সেন এর জন্ম পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) ঢাকায়। ছেলেবেলায় পিতার মৃত্যুর কারণে মাতুলালয়ে
শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তী কালে ইংল্যান্ড থেকে ১৮৯৪ সালে ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথমে রংপুরে এবং পরে লক্ষ্ণৌ শহরে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন।
অতি অল্পবয়সেই অতুলপ্রসাদ পিতৃহারা হন। বাল্য কালে পিতৃহীন হয়ে অতুল প্রসাদ ভগবদ্ভক্ত, সুকন্ঠ গায়ক ও ভক্তিগীতি রচয়িতা মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হন।
মামার বাড়িতে থাকার সময় মাতামহ ভক্তিগীতি রচয়িতা এবং গায়ক কালীনারায়ণ গুপ্তর কাছে সংগীত শিক্ষা নিয়েছিলেন। অতুলপ্রসাদের ভক্তিগীতি, স্বদেশী সংগীত এবং প্রেমের গান প্রায় তিরিশটি বাংলা ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে। তাঁর গান প্রথম চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয় প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত উত্তরায়ণ (১৯৪১) ছবিতে।
পরবর্তী কালে সুধীরবন্ধু মুখোপাধ্যায়, সুবোধ মিত্র, পীযূষ বসু, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়, যাত্রিক, অজিত লাহিড়ী, তরুণ মজুমদার, পার্থপ্রতিম চৌধুরী প্রভৃতি পরিচালক তাঁদের ছবিতে তাঁর লেখা গান ব্যবহার করেছেন।
সমকালীন গীতিকারদের তুলনায় তার সঙ্গীত সংখ্যা সীমিত হলেও অতুল প্রসাদের অনেক গানে সাঙ্গীতিক মৌলিকত্ব পরিলক্ষিত হয়; আর সে কারণেই তিনি বাংলা সঙ্গীত জগতে এক স্বতন্ত্র আসন লাভ করেছেন। তার গানগুলি অতুল প্রসাদের গান নামে বিশেষ ভাবে প্রতিষ্ঠিত।

চলচ্চিত্রপঞ্জি—
১৯৪১ : উত্তরায়ণ; ১৯৪৬ : বন্দেমাতরম্; ১৯৫০ : তথাপি; ১৯৫৫ : রাইকমল; ১৯৫৯ : নৃত্যেরই তালে তালে; ১৯৬৪ : অনুষ্টুপ ছন্দ; ১৯৬৬ : সুভাষচন্দ্র; ১৯৬৮ : জীবন সংগীত; ১৯৭০ : অরণ্যের দিনরাত্রি; ১৯৭১ : এখানে পিঞ্জর, প্রথম বসন্ত, আটাত্তর দিন পরে; ১৯৭২ : মেমসাহেব; ১৯৭৪ : যদুবংশ; ১৯৭৫ : নগর দর্পণে; ১৯৭৬ : সম্রাট; ১৯৭৮ : নিষ্কৃতি; ১৯৮১ : দুষ্টু মিষ্টি; ১৯৮৫ : অজান্তে, অন্বেষণ; ১৯৮৬ : পথভোলা; ১৯৮৭ : টুনিবউ; ১৯৮৮ : কলঙ্কিনী নায়িকা; ১৯৯৮ : সূর্যকন্যা; ১৯৯৯ : আত্মীয় স্বজন; ২০০৯ : হাসি খুশি ক্লাব।
আরও দেখুনঃ