অনু চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন শতরূপা সান্যাল। এতে অভিনয় করেছেন ইন্দ্রাণী হালদার, নির্মাল্য বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবেশ রায়চৌধুরী, মনু মুখোপাধ্যায়, অর্জুন ভট্টাচার্য ।ছবিটি ১৯৯৮ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় নির্বাচিত হয়েছিল।
গল্পটি একজন নারীকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে। তার প্রেমিক সুগত একজন রাজনৈতিক দলের কর্মী । সুগতর প্রেমিকা হওয়ার জন্য সুগতর বিরুদ্ধ পক্ষের রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দ্বারা সে গণধর্ষণের শিকার হয়। অনু লক্ষ করে সব জানার পরও সুগত তার থেকে একটা দূরত্ব রেখে চলছে তাই সে সুগতর থেকে আলাদা হয়ে যায়।
অনু চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা—স্কাড।
- কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা — শতরূপা সান্যাল।
- চিত্রগ্রহণ—শক্তি বন্দ্যোপাধ্যায়।
- শিল্প নির্দেশনা—সমীর কুণ্ডু ।
- সম্পাদনা—নিমাই রায়।
- গীত রচনা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সলিল চৌধুরী।
- নেপথ্য সংগীত—হৈমন্তী শুক্লা, ইন্দ্রাণী সেন, সুতপা বসু, জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়, গীতা রডরিগস।
অনু চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
ইন্দ্রাণী হালদার, নির্মাল্য বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবেশ রায়চৌধুরী, মনু মুখোপাধ্যায়, অর্জুন ভট্টাচার্য, অবনীনাথ ভট্টাচার্য, জয়ন্ত দত্তবর্মণ, খরাজ মুখোপাধ্যায়, চিত্রা সেন, খেয়া ঘোষ, সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, সৌমি দাস।

অনু চলচ্চিত্রের কাহিনি—
এই কাহিনির কেন্দ্রে আছেন একজন নারী। অনু (ইন্দ্রাণী) একজন স্কুল শিক্ষিকা, ভালোবাসে সুগতকে (নির্মাল্য)। সুগত একজন রাজনৈতিক বন্দী। আট বছর সে জেলে আছে। সুগত জেল থেকে ছাড়া পাবে জেনে অনু তাকে আনতে যায়। জেল থেকে বেরিয়ে অনুকে দেখে সুগত বিস্মিত হয়। ফেরার পথে অনু সুগতকে অনুরোধ করে তার মাথায় সিঁদুর দিয়ে তাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে। সুগত অনুকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করে।
বিয়ের রাত্রে শারীরিক মিলনের সময় সুগত বুঝতে পারে অনু কুমারী নয়, অনু জানায় সুগত যে দিন ধরা পড়ে ঐ দিন রাতেই সুগতর বিরুদ্ধ পক্ষের রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দ্বারা সে গণধর্ষণের শিকার হয় এবং তার ভাইকেও মেরে ফেলা হয়। সুগতর প্রেমিকা হওয়ার মূল্য তাকে এভাবেই দিতে হয়েছে। এই কারণে তাকে তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতেও হয় এবং নানা রকম সামাজিক প্রতিরোধেরও সম্মুখীন হতে হয়।
অনু বিস্মিত হয়ে লক্ষ করে সব জানার পরও সুগত তার থেকে একটা দূরত্ব রেখে চলছে, আট বছর আগের সুগত সবরকম সামাজিক অন্যায়ের অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত। সেই সুগত আর জেল থেকে ফিরে আসা বর্তমান সুগত এক ব্যক্তি নয়। সুগতর ডায়েরি পড়ে অনু জানতে পারে যেহেতু তার কুমারিত্ব নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাই সুগত তার প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে। অনু সুগতকে তার কোয়ার্টার ছেড়ে চলে যেতে বলে।
সুগতর রাজনৈতিক বন্ধুরা, বিশেষ করে ভরত (দেবেশ) অনুকে বোঝাতে আসে, তারা তাকে মনে করিয়ে দেয় তার দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং সুগতর জন্য তার আত্মত্যাগের অতীত কথাও। অনু জানায় সে সেই আট বছর আগের সুগতর জন্য হাজার বছর প্রতীক্ষা করতে পারে কিন্তু নিজেকে কোনো পুরুষের আনন্দের উপকরণ করে তুলতে পারবে না ।
আরও দেখুনঃ