অনিতা গুহ একজন ভাতীয় বাঙ্গালী অভিনেত্রী যিনি মূলত পৌরাণিক ছায়াছবিতে অভিনয় করতেন। ১৯৭৫ সালে জয় সন্তোষী মাতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে উনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। সম্পূর্ণ রামায়ণ (১৯৬১), শ্রীরাম ভরত মিলাপ (১৯৬৫), লুকোচুরি (১৯৫৮) ইত্যাদি ছায়াছবিতে উনি অভিনয় করেছেন। অনীতা গুহ ১৯৩৯ সালে বার্মাতে জন্মগ্রহন করলেও অল্পবয়সে পরিবারের সাথে কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে ১৯৫০এর দশকে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে ১৫ বছর বয়সে উনি বম্বে (অধুনা মুম্বই) আসেন। স্কুলে পড়াকালীন পারিবারিক অসুবিধার কারণে পড়া ছাড়তে বাধ্য হন। সমগ্র চলচ্চিত্র জীবনে মাত্র আটটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন।
অনিতা গুহ
অভিনেত্রী হিসেবে ওনার প্রথম ছবি টাঙ্গেওয়ালী (১৯৫৫)। এরপর উনি দেখ কবীরা রোয়া (১৯৫৭), সারদা (১৯৫৭), গুঞ্জ উঠি সেহনাই (১৯৫৭) ইত্যাদি বাণিজ্যসফল ছবিতে কাজ করতে থাকেন। গুঞ্জ উঠি সেহনাই-এর জন্য উনি ওনার একমাত্র ফিল্মফেয়ার পুরস্কার মনোনয়ন পান সেরা সহ-অভিনেত্রী বিভাগে।
প্রথম ছবি সুধীর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত বাঁশের কেল্লা (১৯৫৩)। এই ছবিতে তিনি নায়িকা দুর্গার ভূমিকায় অভিনয় করেন। দেবকী বসু পরিচালিত চিরকুমার সভা-য় (১৯৫৬) নীরবালা এবং মানু সেন পরিচালিত হারজিৎ (১৯৫৭) ছবিতে গীতার ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।
কমল মজুমদার পরিচালিত লুকোচুরি ছবিতে কিশোরকুমারের বিপরীতে গীতার ভূমিকায় তাঁর অভিনয় সুখ্যাতি পায়। এই ছবিতে কিশোরের দ্বৈত ভূমিকায় অভিনয়ের অপর নায়িকা ছিলেন মালা সিংহ।
তাঁর অভিনীত ছবিগুলির অন্যান্য পরিচালকেরা হলেন অশোক চট্টোপাধ্যায়, শক্তি সামন্ত এবং অসিত সেন প্রভৃতি। বাংলা ছাড়াও বহু হিন্দী ছবিতে অভিনয় করেছেন।

চলচ্চিত্রপঞ্জি—
- ১৯৫৩ : বাঁশের কেল্লা;
- ১৯৫৬ : চিরকুমার সভা;
- ১৯৫৭ : হারজিৎ;
- ১৯৫৮ : লুকোচুরি;
- ১৯৫৯ : স্বপ্নপুরী;
- ১৯৬৬ : লবকুশ;
- ১৯৭৭ : আনন্দ আশ্রম;
- ১৯৮৪ : প্ৰাৰ্থনা ৷
অনিতা গুহ অভিনেতা মানিক দত্তকে বিয়ে করেন। ওনাদের কোন সন্তান ছিল না। স্বামীর মৃত্যুর পর উনি মুম্বাইতে একাই থাকতেন। ২০ জুন ২০০৭ হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে ওনার মৃত্যু হয়।
আরও দেখুনঃ