অনুপম ঘটকের জন্ম ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১১ই এপ্রিল বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলের পাথরাইল গ্রামে। পিতা অতুলচন্দ্র ঘটক ছিলেন গানবাজনার বিশেষ অনুরাগী। সঙ্গীতপ্রিয় পিতার সাহচর্যে কলকাতায় এসে আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক হওয়া ও পরে রেলের চাকরি পাওয়ার পর, সব ছেড়ে সঙ্গীতকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
অনুপম ঘটক
অনুপম ঘটক ছেলেবেলা থেকেই গান শিখতেন। চিত্রপরিচালক হীরেন বসুর মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পের সাথে যোগাযোগ ঘটে। নিউ থিয়েটার্স প্রযোজিত এবং হীরেন বসু পরিচালিত মহুয়া (১৯৩৪) ছবিতে গায়ক ও অভিনেতা হিসাবে প্রথম আত্মপ্রকাশ, প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে তখনও বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়নি। এই ছবির সংগীত পরিচালক ছিলেন বিষণচাঁদ বড়াল।
ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত বিদ্রোহী (১৯৩৫, সংগীত : হিমাংশু দত্ত), প্রিয়নাথ গাঙ্গুলী পরিচালিত পল্লীবধূ (১৯৩৬), যতীন দাস পরিচালিত পরপারে (১৯৩৬, সংগীত : কৃষ্ণচন্দ্র দে) এবং প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়া পরিচালিত গৃহদাহ (১৯৩৬, সংগীত : রাইচাঁদ বড়াল) ছবিতেও অনুপম গায়ক-অভিনেতা হিসাবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

নিজের সংগীত পরিচালনায় প্রথম ছবি পায়ের ধূলো (১৯৩৫)। ছবিটির পরিচালক ছিলেন জ্যোতিষ মুখোপাধ্যায়। ১৯৩৫ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ২৩টি ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন। উল্লেখযোগ্য যে সব পরিচালকদের সাথে কাজ করেছেন তাঁরা হলেন প্রমথেশচন্দ্র বড়ুয়া, সুকুমার দাশগুপ্ত, কালীপ্রসাদ ঘোষ, নীরেন লাহিড়ী, অজয় কর, চিত্ত বসু, হীরেন বসু, নীতিন বসু প্রভৃতি। সংগীত পরিচালনায় শেষ ছবি নীতিন বসু পরিচালিত মাধবীর জন্য (১৯৫৭)। এই ছবিটির সংগীত পরিচালনা তিনি ভি. বালসারার সাথে দ্বৈতভাবে করেছিলেন।
১৯৪২-৫০ পর্যন্ত প্রথমে লাহোরে, পরে বোম্বেতে কয়েকটি হিন্দী ও উর্দু ছবিতেও সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন।
চলচ্চিত্রপঞ্জি— —
- ১৯৩৪ : মহুয়া;
- ১৯৩৫ : বিদ্রোহী, পায়ের ধূলো;
- ১৯৩৬ : পল্লীবধূ, পরপারে, কাল পরিণয়, গৃহদাহ;
- ১৯৪০ : শাপমুক্তি;
- ১৯৪১ : কর্ণার্জুন, মায়ের প্রাণ;
- ১৯৪২: পাষাণ দেবতা;
- ১৯৫০ : শ্রীতুলসীদাস;
- ১৯৫১ : অভিশপ্ত;
- ১৯৫২ : সঞ্জীবনী, কার পাপে;
- ১৯৫৪ : কল্যাণী, অগ্নিপরীক্ষা;
- ১৯৫৫ : অনুপমা, পরেশ, দৃষ্টি;
- ১৯৫৬ : কীৰ্ত্তিগড়, একটি রাত, অসমাপ্ত, শঙ্করনারায়ণ ব্যাঙ্ক, নাগরদোলা;
- ১৯৫৭ : একতারা, সুরের পরশে, পরের ছেলে, মাধবীর জন্য।
আরও দেখুনঃ