আজ কাল পরশুর গল্প চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। ছবিটি মন্বন্তরের ঘটনাবলির জীবন্ত দলিল হিসাবে ১৯৮১-৮২ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামার জন্য নির্বাচিত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বাংলার মন্বন্তরের পটভূমিকা এই চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় কাহিনী।মন্বন্তরের সময় খাদ্যাভাবে গোয়ালপাড়ার অনেক মানুষের সাথে রমাপদ খাদ্যের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়।মন্বন্তর পরবর্তী কালে রমাপদ গ্রামে ফিরে এসে মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়।জোতদার, জমিদার এবং মজুতদারেরা যুদ্ধের সুযোগে আরও বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য বহু লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।
আজ কাল পরশুর গল্প চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা—নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় প্রোডাকসন্স।
- কাহিনি— মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা—নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়।
- সংগীত পরিচালনা — নিখিল চট্টোপাধ্যায়।
- চিত্রগ্রহণ— কে. এ. রেজা।
- শিল্প নির্দেশনা – রবি চট্টোপাধ্যায়।
- সম্পাদনা – অমিয় মুখোপাধ্যায়।
আজ কাল পরশুর গল্প চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী, দীপঙ্কর দে, নিরঞ্জন রায়, মালা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু বসু, প্রদ্যোৎ চট্টোপাধ্যায়, আলপনা গুপ্ত, সীতা মুখোপাধ্যায়।

আজ কাল পরশুর গল্প চলচ্চিত্রের কাহিনি—
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বাংলার মন্বন্তরের পটভূমিকায় এই ছবি তৈরি। বাংলায় গোয়ালপাড়া গ্রামের ভাগচাষি রমাপদ গ্রামের জোতদার ঘনশ্যাম দাসের জমি চাষ করত। মন্বন্তরের সময় খাদ্যাভাবে গোয়ালপাড়ার অনেক মানুষের সাথে রমাপদ খাদ্যের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়।
গ্রামের অবশিষ্ট মানুষেরা ঘনশ্যাম দাসের কাছে সাহায্যের আবেদন করে, এই সুযোগে ঘনশ্যাম গ্রামের স্কুল মাস্টারের মেয়ে দুর্গাকে (মহুয়া) নিজের অঙ্কশায়িনী করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ঘনশ্যাম এবং তার সহচররা দুর্গার নামে কুৎসা রটনা করে, অপমানে দুর্গার বাবা আত্মহত্যা করে এবং দুর্গা ও তার মা গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে রমাপদর মৃত্যুপথযাত্রী পুত্র খাবার জোগাড়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে ঘনশ্যামের হাতে তুলে দেয়।
মন্বন্তর পরবর্তী কালে রমাপদ গ্রামে ফিরে এসে মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। তার অর্ধমৃত কঙ্কালসার স্ত্রীকে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মানুষের সাহায্যে খুঁজে পাওয়া গেলেও তার পুত্রবধূকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
জোতদার, জমিদার এবং মজুতদারেরা যুদ্ধের সুযোগে আরও বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য বহু লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়। একদিকে অর্থের লোভ অন্যদিকে ইন্দ্রিয় সুখের জন্য এই মানুষেরা বহু পরিবারের বিপর্যয়ের কারণ হয়েছিল।
আরও দেখুনঃ