আলোর পিপাসা চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তরুণ মজুমদার। চলচ্চিত্রটির সংগীত পরিচালনা করেছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। এর মুখ্য চরিত্রে রয়েছে সন্ধ্যা রায়, বসন্ত চৌধুরী, পাহাড়ী সান্যাল।
ডাঃ মুখোপাধ্যায় তাঁর চিকিৎসক জীবনে মধ্য বয়সে পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বালকের চিকিৎসার সুবাদে তিনি বাইজি রওশন বাই-এর সান্নিধ্যে আসেন।
রওশন এক সময় বাইজি জীবন ছেড়ে সংসারে প্রবেশ করেছিল। রওশন একটি পুত্রের জন্ম দেয় এবং তাকে মানুষ করার জন্য এক ব্রাহ্মণের বিধবাকে নিযুক্ত করে। সে অর্থ উপার্জন করার জন্য আবার বাইজির জীবনে ফিরে আসে। সরমার পুত্র পার্থ বড় হয়ে বিলেত ফেরত ডাক্তার হয় এবং ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের কাছে রাখা মায়ের গচ্ছিত গয়না গরিব মানুষের সেবায় ব্যয় করার অনুরোধ করে।
আলোর পিপাসা চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা — ডি. আর. প্রোডাকসন্স।
- প্রযোজক – দেবেশ ঘোষ।
- চিত্রনাট্য, সংলাপ ও পরিচালনা —তরুণ মজুমদার।
- কাহিনি – বনফুল।
- সংগীত পরিচালনা — হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
- চিত্রগ্রহণ—সৌমেন্দু রায়।
- শিল্প নির্দেশনা—বংশী চন্দ্রগুপ্ত।
- সম্পাদনা — দুলাল দত্ত পাল, সুজিত সরকার।
- নৃত্য নির্দেশনা – প্রভাত ঘোষ।
- গীতিকার—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাইফি আজমী, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
আলোর পিপাসা চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
সন্ধ্যা রায়, বসন্ত চৌধুরী, পাহাড়ী সান্যাল, অনুপকুমার, অনুভা গুপ্তা, অসিতবরণ, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, সবিতা সিন্হা, সতীন্দ্র ভট্টাচার্য।

নেপথ্য সংগীত —
লতা মঙ্গেশকর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, রাজেশকুমারী, অনুরাধা ঘোষ, প্রতিমা বসু, স্মিতা মুখোপাধ্যায়।
আলোর পিপাসা চলচ্চিত্রের কাহিনি—
ডাঃ অগ্নীশ্বর মুখোপাধ্যায়ের জীবন নিয়ে বনফুলের লেখা ‘অগ্নীশ্বর’ উপন্যাসের একটি পর্ব অবলম্বনে এই ছবি। ডাঃ মুখোপাধ্যায় (পাহাড়ী) তাঁর চিকিৎসক জীবনে বহু মানুষের সংস্পর্শে আসেন। মধ্য বয়সে পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বালকের চিকিৎসার সুবাদে তিনি বাইজি রওশন বাই (সন্ধ্যা)-এর সান্নিধ্যে আসেন।
রওশন এক সময় বাইজি জীবন ছেড়ে সংসারে প্রবেশ করেছিল। গঙ্গায় চান করতে গিয়ে এক টোলের অধ্যাপককে (বসন্ত) দেখে রওশন মুগ্ধ হয় এবং নিজের আসল পরিচয় গোপন করে সরমা নাম গ্রহণ করে ঐ অধ্যাপকের বাড়িতে আশ্রয় নেয় এবং পরে অধ্যাপক সরমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। সোহনলাল (অনুপ) নামে এক দালাল সরমাকে পরিচয় প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ রোজগার করত।
তার কাছ থেকে অধ্যাপক সরমার আসল পরিচয় জানতে পারেন এবং তাকে ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান। গর্ভবর্তী সরমা একটি পুত্রের জন্ম দেয় এবং তাকে মানুষ করার জন্য এক ব্রাহ্মণের বিধবাকে নিযুক্ত করে। সে অর্থ উপার্জন করার জন্য আবার বাইজির জীবনে ফিরে আসে। সরমার পুত্র পার্থ (সতীন্দ্র) বড় হয়ে বিলেত ফেরত ডাক্তার হয় এবং ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের কাছে রাখা মায়ের গচ্ছিত গয়না গরিব মানুষের সেবায় ব্যয় করার অনুরোধ করে।
তরুণ মজুমদার যাত্রিক গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে এসে নিজের একক পরিচালনায় এই ছবিটি তৈরি করেছিলেন। এই ছবির মুদ্রিত চিত্রনাট্য (কিরণ প্রিন্টার্স) পুস্তকাকারে চিত্রগৃহের সামনে বিক্রি হত বলে সংবাদ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে অধীশ্বর উপন্যাস অবলম্বনে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় পরবর্তী কালে অগ্নীশ্বর (১৯৭৫) ছবি করেন।
