আলী আকবর খান (উস্তাদ) এর জন্ম পূর্ববঙ্গে কুমিল্লার অন্তর্গত শিবপুর গ্রামে। পিতা আলাউদ্দিন খান ছিলেন মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত মাইহার রাজ দরবারের সংগীত শিল্পী। সরোদ বাদনে প্রাথমিক তালিম বাবার কাছেই হয়েছিল, পরবর্তী কালে কাকা আফতাবুদ্দিন খানের কাছে তবলা ও পাখোয়াজের শিক্ষা পান। ১৯৩৬ সালে এলাহাবাদ সংগীত সম্মেলনে মাত্র তেরো বছর বয়সে প্রথম অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তী কালে ঐ একই সংগীত সম্মেলনে রবিশঙ্করের সাথে তাঁর প্রথম যুগলবন্দী পরিবেশন। ১৯৩৮ সালে বোম্বের অল ইন্ডিয়া রেডিওতে যোগদান এবং ১৯৪০ সাল থেকে প্রতি মাসে তাঁর সংগীত পরিবেশন রেডিওর শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিল।
আলী আকবর খান (উস্তাদ)
১৯৪৩ সালে তিনি যোধপুর রাজসভায় সংগীত শিল্পী হিসাবে যোগ দেন এবং স্বাধীনতার পর ১৯৪৮ সালে তিনি বোম্বে চলে যান। বোম্বেতে থাকাকালীন তিনি কিছু চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেন।
১৯৫৬ সালে কলকাতায় একটি সংগীত বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আলী আকবর কলেজ অফ মিউজিক’। বর্তমানে কলেজটি কালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত। বাংলা ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসাবে তাঁর প্রথম কাজ সন্তোষ গুহরায় পরিচালিত রাত্রিশেষে (১৯৫৭) ছবিতে। ১৯৫৭-৬৬ পর্যন্ত সতেরোটি বাংলা ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন।
উল্লেখযোগ্য যে সব পরিচালকের সাথে কাজ করেছেন তাঁরা হলেন, জ্যোতির্ময় রায়, রাজেন তরফদার, ঋরিককুমার ঘটক, সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ, তারু মুখোপাধ্যায়, নীরেন লাহিড়ী, হরিসাধন দাশগুপ্ত প্রভৃতি।
তপন সিংহ পরিচালিত ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০) ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তী কালে দেশে এবং বিদেশে বহু সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত হন। ভারত সরকার ১৯৮৯ সালে তাঁকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করেন।

চলচ্চিত্রপন্থি—
- ১৯৫৭ রাত্রিশেষে, আদর্শ হিন্দু হোটেল, অন্তরীক্ষ,
- ১৯৫৮ : নুপুর, অযান্ত্রিক:
- ১৯৬০ দেবী, ক্ষুধিত পাষাণ, সূরের পিয়াসী:
- ১৯৬১ ঝিন্দের বন্দী, নেকলেস, ইংগিত;
- ১৯৬২ : শাস্তি, বেনারসী;
- ১৯৬৩ : সাত ভাই, ন্যায়দণ্ড;
- ১৯৬৫ : একই অঙ্গে এত রূপ;
- ১৯৬৬ : রাজদ্রোহী।
আরও দেখুনঃ