১৯শে এপ্রিল চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। ছবিটি ১৯৯৫ সালে ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় নির্বাচিত হয়েছিল।
সরোজিনী একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী। সে বহু সম্মানেও ভূষিত হয়েছে। অন্যদিকে তার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় তার স্বামী মনীশের মনে হীনমন্যতা জন্ম নেয়। মনীশের আকস্মিক মৃত্যুর ফলে সরোজিনী অদিতিকে একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দেয়। মা ও মেয়ের মানসিক দূরত্ব বাড়তেই থাকে।
ছবির ঘটনা একটা গোটা দিন ও রাত্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ। দিনটা হল ১৯শে এপ্রিল। মায়ের একাকিত্ব, মেয়ের সাথে মায়ের দূরত্বে মায়ের মনঃকষ্ট অদিতি বুঝতে পারে।অদিতি বোঝে জীবন অনেক বড়, হতাশ হয়ে অকস্মাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জীবনকে বিড়ম্বিত করে।
১৯শে এপ্রিল চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা—স্পন্দন ফিল্মস প্রযোজক রেণু রায়, অপর্ণা সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষ।
- কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা — ঋতুপর্ণ ঘোষ।
- সংগীত পরিচালনা – জ্যোতিষ্ক দাশগুপ্ত।
- চিত্রগ্রহণ – সুনির্মল মজুমদার।
- শিল্প নির্দেশনা— বিবি রায়।
- শব্দগ্রহণ—চিন্ময় নাথ।
- সম্পাদনা—উজ্জ্বল নদী।
- নৃত্য পরিকল্পনা – অল্পনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯শে এপ্রিল চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
অপর্ণা সেন, দেবশ্রী রায়, দীপঙ্ক দে, চিত্রা সেন, বোধিসত্ত্ব মজুমদার, প্রসেনজিৎ।
১৯শে এপ্রিল চলচ্চিত্রের কাহিনি –
সরোজিনী (অপর্ণা) একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী। নৃত্যই তার ধ্যান জ্ঞান। এই শিল্পের সাধনায় সে প্রায় সবকিছুই নিবেদন করেছে, বহু সম্মানেও ভূষিত হয়েছে। অন্যদিকে তার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় তার স্বামী মনীশের (বোধিসত্ত্ব) মনে হীনমন্যতা জন্ম নেয়। মনীশ কন্যা অদিতিকে (দেবশ্রী) নিয়ে সরোজিনীর সাথে একই বাড়িতে থাকলেও স্ত্রীর সাথে কিছুটা দূরত্ব রেখেই চলত। মনীশের আকস্মিক মৃত্যুর ফলে সরোজিনী অদিতিকে একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দেয়। মা ও মেয়ের মানসিক দূরত্ব বাড়তেই থাকে।
ছবির ঘটনা একটা গোটা দিন ও রাত্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ। দিনটা হল ১৯শে এপ্রিল, অদিতির কাছে এটি একটি বিশেষ দিন কারণ এই দিনটি তার বাবার মৃত্যু বা তিরোধান দিবস। অদিতি এখন পিতার মতোই একজন ডাক্তার, তার একজন পুরুষ বন্ধু (প্রসেনজিৎ) আছে, ছুটিতে অদিতি বাড়ি এসে খবর পায় তার মা জাতীয় সম্মান পেয়েছে এবং পুরস্কার আনার জন্য তাকে দিল্লি যেতে হবে।

মা দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়, অদিতি ফোনে তার বন্ধুকে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়, তার মনে হয় তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্যেও ফাটল দেখা দিচ্ছে। অদিতি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
সরোজিনীর দিল্লি যাত্রা বাতিল হয়, সে ঘরে ফিরে আসে। সরোজিনী মেয়ের ঘরে ঘুমের ওষুধের স্ট্রিপ দেখে তার সাথে খোলাখুলি কথা বলে। মেয়ে বুঝতে পারে শিল্পীজীবনের প্রথম দিকে মাকে তার নাচের জন্য অনেক সময় দিতে হয়েছে এবং তার উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তায় মনীশের মনে জন্ম নেওয়া হীনমন্যতা কাটানোর জন্য সরোজিনী বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল।
মায়ের একাকিত্ব, মেয়ের সাথে মায়ের দূরত্বে মায়ের মনঃকষ্ট অদিতি বুঝতে পারে। এই প্রথম মায়ের সাথে মুখোমুখি কথা বলে। একে অন্যের কষ্টটাকে অনুভব করে। অদিতি বোঝে জীবন অনেক বড়, হতাশ হয়ে অকস্মাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জীবনকে বিড়ম্বিত করে।
পুরস্কার—
১৯৯৫ সালে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণকমল এবং দেবশ্রী রায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে জাতীয় পুরস্কার রৌপ্য কমল অর্জন করেন।
আরও দেখুনঃ