ঋতুপর্ণ ঘোষ

ঋতুপর্ণ ঘোষ জন্ম ১৯৬৩ সালে কলকাতায়। স্কুল শিক্ষা সাউথ পয়েন্টে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্মান লাভ করেন। পিতা সুনীল ঘোষ ছিলেন পেন্টর এবং তথ্যচিত্র পরিচালক।

ঋতুপর্ণ ঘোষ

ঋতুপর্ণ ঘোষ । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

১৯৮৫ সালে ঋতুপর্ণ কর্মজীবন শুরু করেন একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কপি রাইটার হিসাবে। পরবর্তী কালে বিজ্ঞাপনী চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হন। ঐ সময়কালে তিনি প্রায় ১৮টি বিজ্ঞাপনী চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯৯৪ সালে ছোটদের জন্য নির্মিত তাঁর প্রথম কাহিনিচিত্র হীরের আংটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করলেও বাণিজ্যিক ভাবে মুক্তি পায় নি। দ্বিতীয় ছবি ১৯শে এপ্রিল (১৯৯৪) তাঁকে প্রথম জাতীয় পুরস্কার এনে দেয়।

ছবিটি ১৯৯৪ সালে নির্মিত শ্রেষ্ঠ ছবি হিসাবে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক লাভ করে এবং ছবির অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে পুরস্কৃত হন। ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলা, হিন্দী ও ইংরাজি ভাষায় ১৮টি কাহিনিচিত পরিচালনার পাশাপাশি কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত আর একটি প্রেমের গল্প (২০১০) ছবিতে একজন সমকামী পুরুষের চরিত্রে অভিনয় করেন।

 

ঋতুপর্ণ ঘোষ । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

নাটক ও যাত্রায় স্ত্রী ভূমিকায় অভিনেতা চপল ভাদুড়ীর চরিত্রে ঋতুপর্ণের অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে। এই সালেই তিনি সঞ্জয় নাগের পরিচালনায় মেমোরিজ ইন মার্চ (২০১০) ছবিতেও অভিনয় করেন।

১৯৯৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ঋতুপৰ্ণ পরিচালিত নয়টি ছবি জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ১৯শে এপ্রিল (১৯৯৪) ছবিটির পর উৎসব (২০০০) এবং আবহমান (২০১০) ছবির জন্য ঋতুপর্ণ শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জাতীয় সম্মানে ভূষিত হন। দহন (১৯৯৭) ছবি তাঁকে এনে দেয় শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকারের জাতীয় সম্মান।

শুভ মহরত (২০০০), চোখের বালি (২০০৪), সব চরিত্র কাল্পনিক (২০০৯), আবহমান (২০১০) বাংলা ভাষায় নির্মিত বছরের সেরা ছবি হিসাবে রজত কমল সম্মানে ভূষিত হয়। রেনকোট (হিন্দী, ২০০৫) এবং দ লাস্ট লিয়র (ইংরাজি, ২০০৮) ছবি দুটিও হিন্দী ও ইংরাজি ভাষায় নির্মিত বছরের সেরা ছবি হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছিল।

 

Google News ঋতুপর্ণ ঘোষ
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি বোম্বে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ১৯৯৯ সালে পুরস্কৃত হয় অসুখ (১৯৯৫), এবং ২০০২ সালে তিতলি (২০০২)। বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাড়ীওয়ালী (১৯৯১) ছবিটি NEPTAC পুরস্কারে সম্মানিত হয়। প্রসঙ্গত বাড়ীওয়ালী ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে কিরণ খের ঐ বছরের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় সম্মান লাভ করেছিলেন।

এছাড়াও ১৯৯৮ সালে কার্লো ভি ভ্যারি চলচ্চিত্র উৎসবে ঋতুপর্ণ পরিচালিত রেনকোট (২০০৪), লোকার্নো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চোখের বালি (২০০৩) এবং অন্তরমহল (২০০৫) ছবি দুটি প্রদর্শিত হয়েছিল।

 

চলচ্চিত্রপঞ্জি –

  • হীরের আংটি (১৯৯৪),
  • ১৯শে এপ্রিল (১৯৯৪),
  • দহন (১৯৯৭),
  • বাড়ীওয়ালী (১৯৯৯),
  • অসুখ (১৯৯৯),
  • উৎসব (২০০০),
  • তিতলি (২০০২),
  • শুভ মহরত (২০০৩),
  • চোখের বালি (২০০৩),
  • রেনকোট (হিন্দী, ২০০৪),
  • অন্তরমহল (২০০৫),
  • দোসর (২০০৬),
  • দ লাস্ট লিয়র (ইংরাজি, ২০০৮),
  • খেলা (২০০৮),
  • সব চরিত্র কাল্পনিক (২০০৯),
  • আবহমান (২০১০),
  • নৌকাডুবি (২০১০),
  • সানগ্লাস (২০১০)।

 

অভিনীত চলচ্চিত্র—

আর একটি প্রেমের গল্প (পরিচালনা কৌশিক গাঙ্গুলী, ২০১০) মেমোরিজ ইন মার্চ (পরিচালনা সঞ্জয় নাগ, ২০১০)।

 

google news logo ঋতুপর্ণ ঘোষ

 

প্রাসঙ্গিক গ্রন্থ

রিডিং ঋতুপর্ণ। সোমা এ. চ্যাটার্জ্জী। ২০১৩

 

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment