করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাঙালি অভিনেত্রী। করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম হয় ব্রিটিশ ভারতে সাঁওতাল পরগণার মহেশপুরে । তার পৈতৃক বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশের খুলনার পয়োগ্রামে ।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্মান লাভ করেন।
করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় (সেন)
গান্ধীবাদী পরিবারের মেয়ে হয়েও বামপন্থী সহপাঠী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন। স্বামীর রাজনীতির সূত্রেই গণনাট্য সঙ্ঘের সাথে যুক্ত হন। পঞ্চাশের দশকে গণনাট্যের জনান্তিকে’ এবং ‘সংকেত’ নাটকে অভিনয় করেছেন। উৎপল দস্তুর পরিচালনায় ইবসেনের নাটক ‘এ ডলস হাউস’-এ নোরার ভূমিকায় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।
প্রথম চলচ্চিত্রাভিনয় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত পথের পাঁচালী (১৯৫৫) ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র সর্বজয়ার ভূমিকায়। পরে অপরাজিত (১৯৫৬) ছবিতে সর্বজয়ার ভূমিকায় তাঁর অভিনয় তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্থান করে দেয়। এই দুটি চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি সত্যজিৎ রায়ের দেবী এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা ছবিতে অভিনয় করেন ।
এছাড়া তিনি অভিনয় করেছেন মৃণাল সেনের ইন্টারভিউ অগ্রগামীর হেডমাস্টার, শম্ভু মিত্র এবং অমিত মৈত্রের শুভবিবাহ ছবিতে ।সমগ্র জীবনে মাত্র নয়টি কাহিনিচিত্র, একটি তথ্যচিত্র এবং একটি অসম্পূর্ণ কাহিনিচিত্রে অভিনয় করেছেন।
সর্বজয়ার ভূমিকায় অভিনয় ছাড়াও লাবণ্য (হেডমাষ্টার, ১৯৫৯), হরসুন্দরী (দেবী, ১৯৬০), লাবণ্য (কাঞ্চনজঙ্ঘা, ১৯৬২); এবং নায়কের মা (ইন্টারভিউ, ১৯৭০) ছবিগুলিতে তাঁর সংযত অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছে। শাস্তিপ্রসাদ চৌধুরী পরিচালিত একটি তথ্যচিত্রে এবং ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত অসমাপ্ত ‘কত অজানারে’ ছবিতেও তিনি অভিনয় করেছিলেন।
তাঁর সাক্ষাৎকার, গল্প, চিত্রসমালোচনা এবং অন্যান্য লেখাগুলির সংকলন ১৯৯৯ সালে থীমা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
গণনাট্য সঙ্ঘে তিনি দীর্ঘকাল ছিলেন । সেখানে সংকেত, জনান্তিকে তার অভিনীত নাটক । তিনি সলিল চৌধুরীর নাটকে অভিনয় করেছেন । এ ছাড়াও তিনি লিটিল থিয়েটার গ্রুপ এবং আরো কয়েকটি সংগঠনে অভিনয় করেছেন ।

চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৫৫ পথের পাচালী:
- ১৯৫৬ অপরাজিত
- ১৯৫৯ হেডমাষ্টার, শুভ বিবাহ,
- ১৯৬০ দেবী,
- ১৯৬২ কাঞ্চনজঙ্ঘা:
- ১৯৬৩ উত্তরায়ণ:
- ১৯৭০ ইন্টারভিউ:
- ১৯৭২ নয়া মিছিল।
আরও দেখুনঃ