কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র

কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- আর ডি বনশলের প্রযোজনায় চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সত্যজিৎ রায়।

‘কাপুরুষ’ ১৯৬৫ সালে মুক্তি প্রাপ্ত সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্র। ছবিটির মূল নাম ‘কাপুরুষ ও মহাপুরুষ’। দুটি আলাদা স্বাদের গল্পকে একসাথে নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত। প্রথম গল্পটির নাম কাপুরুষ। যার মূল কাহিনী সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘জনৈক কাপুরুষের কাহিনী গল্প থেকে নেওয়া।

মহাপুরুষ ১৯৬৫ সালে নির্মিত সত্যজিত রায় পরিচালিত চলচ্চিত্র, যা রাজশেখর বসু (পরশুরাম)-এর ছোটগল্প বিরিঞ্চিবাবা অবলম্বনে তৈরী। মূল চলচ্চিত্রটির নাম ‘কাপুরুষ ও মহাপুরুষ’ যা দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের গল্পকে নিয়ে তৈরী। প্রথম গল্পটি কাপুরুষ এবং দ্বিতীয় গল্পটি মহাপুরুষ।

 

কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র

  • প্রযোজনা – আর ডি বনশল।
  • চিত্রনাট্য, সংগীত ও পরিচালনা – সত্যজিৎ রায়।
  • চিত্রগ্রহণ — সৌমেন্দু রায়,
  • শিল্প নির্দেশনা বংশী চন্দ্রগুপ্ত।
  • শব্দগ্রহণ নুপেন পাল, অতুল চট্টোপাধ্যায়, শ্যামসুন্দর সুজিত সরকার।
  • সম্পাদনা — দুলাল দত্ত।

কাপুরুষ (৭৪ মিনিট)

 কাহিনি—

প্রেমেন্দ্র মিত্র।

কাপুরুষ চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, শাস্তি চট্টোপাধ্যায়, সতীশ হালদার, নেওটান লাল।

 

Google News কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

কাপুরুষ চলচ্চিত্রের কাহিনি—

চিত্রকাহিনির উপাদান সংগ্রহ করার জন্য সাহিত্যিক অমিতাভ রায় (সৌমিত্র) জলপাইগুড়ি জেলার হাসিমারা যাচ্ছিলেন। পথে তার গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। স্থানীয় এক চা বাগানের মালিক বিমল গুপ্ত (হারাধন অমিতাভর ত্রাণে এগিয়ে আসেন এবং তাঁর বাংলোতে রাত্রিবাস করতে অনুরোধ করেন।

অমিতাভ বিমল গুপ্তর গৃহে এসে স্তম্ভিত হয়ে দেখে যে বিমল গুপ্তর স্ত্রী তারই পূর্ব প্রণয়ী করুণা (মাধবী)। কলেজ জীবনে কলকাতায় তাদের পরিচয় ভালোবাসায় পরিণত হয়। একদিন করুণা অমিতাভকে জানায় তার মামা বদলির অজুহাতে তাকে এখান থেকে সরিয়ে দিতে চান। করুণা অমিতাভর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা এবং স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেছিল। দুর্বলচিত্ত অমিতাভ সেদিন করুণাকে আশ্রয় নিতে পারে নি।

অমিতাভ তার পূর্ব প্রণয়ীকে জানায় বর্তমানে সে প্রস্তুত, করুণাকে সে তার সাথে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু করুণা অমিতাভর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। প্রকাশনা ছবির চিত্রনাট্য এক্ষণ পত্রিকায় ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

 

কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র । বাংলা চলচ্চিত্রের অভিধান

 

মহাপুরুষ (৬৫ মিনিট)

কাহিনি

পরশুরাম।

মহাপুরুষ চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —

চারুপ্রকাশ ঘোষ, রবি ঘোষ, সতীন্দ্র ভট্টাচার্য, নি মুখোপাধ্যায়, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসাদ মুখোপাধ্যায়, সোমেন বসু, নির্মল ঘোষ, শৈলেন গঙ্গোপাধ্যায়, সন্তোষ দত্ত, গীতালি রায়, রেণুকা রায়, ইলা চট্টোপাধ্যায়, লাবণ্য দত্ত, শাস্তি চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ বসু, মণি শ্রীমানী, জে বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায়, জগৎ চক্রবর্তী প্রভাত সরকার, অজিত গুপ্ত, ননী সর্দার, আদিত্য সিংহ।

 

google news logo কাপুরুষ ও মহাপুরুষ চলচ্চিত্র

 

মহাপুরুষ চলচ্চিত্রের কাহিনি—

এ্যাডভোকেট গুরুপদ মিত্র (প্রসাদ) স্ত্রীর মৃত্যুর পর শোকে মুহ্যমান। এই সময় কন্যা কুঁচকিকে (গীতালি) নিয়ে কলকাতায় ফেরার পথে ত্রিকালজ্ঞ মহাপুরুষ বিরিঞ্চিবাবার (চারপ্রকাশ) সাক্ষাৎ পান এবং তাঁকে গুরু হিসাবে বরণ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

অন্যদিকে কুঁচকি ও সত্য (সতীন্দ্র) পরস্পরকে ভালোবাসলেও সত্যর ব্যবহারে অসন্তুষ্ট কুঁচকি বিরিঞ্চিবাবার শিষ্যা হিসাবে জীবন কাটানোর সঙ্কল্প নেয় এবং সত্যকে তার সংকল্পর কথা জানিয়ে দেয়। সত্য তার বন্ধু নিবারণের (সোমেন) সাহায্য প্রার্থনা করে। অনুসন্ধান করে তারা বুঝতে পারে।

বিরিঞ্চিবাবা একজন ভণ্ড, তারা সর্বসমক্ষে বিরিঞ্চির মুখোশ খুলে দেয়। সত্য এবং নিবারণ সকলের প্রশংসা লাভ করে, সত্য তার সাথে বোনাস হিসাবে লাভ করে কুঁচকির প্রেমপূর্ণ দৃষ্টি। এই কাহিনি অবলম্বনে মানু সেনের পরিচালনায় এবং এলায়েড ফিল্মস এর প্রযোজনায় ১৯৪৪ সালে ‘বিরিক্ষবাবা’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চিত্র নির্মিত হয়েছিল।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment