গিরিশচন্দ্র ঘোষ এর জন্ম কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলে। প্রখ্যাত নট, নাট্যকার এবং কবি গিরিশচন্দ্র ছোটবেলায় পাঠশালার পাঠ শেষ করে ওরিয়েন্টাল সেমিনারীতে ভর্তি হন। পরবর্তী কালে কিছুদিন হেয়ার স্কুলেও পড়াশোনা করেন। প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়ে প্রথাগত শিক্ষার চেষ্টা ত্যাগ করেন। স্বশিক্ষিত গিরিশের ভারতীয় কাব্য, পুরাণ এবং ইংরাজি সাহিত্যের উপর দখল ছিল। ১৮৬৭ সাল থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নাটকের সাথে ছিল তাঁর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ। জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্টার, এমারেল্ড, মিনার্ভা, ক্ল্যাসিক, কোহিনূর প্রভৃতি রঙ্গমঞ্চে নাট্য পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন।
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
নির্বাক যুগেই তাঁর লেখা নাটক অবলম্বনে ৬টি ছবি নির্মিত হয়। ম্যাডান থিয়েটার্স প্রযোজিত নাল দময়ন্তী (১৯২১) তাঁর নাটক অবলম্বনে প্রথম চলচ্চিত্র। পরবর্তী সময়ে জ্যোতিষ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত প্রযুম (১৯২৬), ভ্রান্তি (১৯২৮), শান্তি কি শান্তি (১৯২৮), কালীপ্রসাদ ঘোষ পরিচালিত শঙ্করাচার্য (১৯২৭), এবং প্রিয়নাথ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত জন্য (১৯২৭) প্রভৃতি ছবিগুলি নির্মিত হয়েছিল।
সবাক যুগেও তাঁর নাটক অবলম্বনে ৬টি ছবি তৈরি হয়েছে। বি. এল. খেমকা প্রতিষ্ঠিত হয় ইন্ডিয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিজ প্রযোজিত এবং তিনকড়ি চক্রবর্তী পরিচালিত বিল (১৯৩০) সবাক যুগে তাঁর নাটক অবলম্বনে প্রথম ছবি। পরবর্তী ছবি ধ্রুব (১৯৩৪) দ্বৈত পরিচালনা করেন সত্যেন্দ্রনাথ দে এবং কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর প্রযুক্ত নাটকটি পাঁচ বার চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।
পাঁচটি ছবিতে তাঁর লেখা গান ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলি যথাক্রমে অন্নপূর্ণার মন্দির (১৯৩৬), মহাকবি গিরিশচন্দ্র (১৯৫০), যুগদেবতা (১৯৫০), সুবর্ণলতা (১৯৮১) এবং প্রফুল্ল (১৯৮২)। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গিরিশচন্দ্রের জীবনী অবলম্বনে মধু বসু পরিচালনা করেন মহাকবি গিরিশচন্দ্র (১৯৫৬)। এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন পাহাড়ী সান্যাল।

চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯২১ নিল দময়ন্তী,
- ১৯২৬ প্রফুল্ল,
- ১৯২৭ শঙ্করাচার্য, জনা
- ১৯২৮ শাস্তি কি শান্তি, ভ্রান্তি,
- ১৯৩৩ বিল্বমঙ্গল
- ১৯৩৪ ধ্রুব;
- ১৯৩৫ প্রফুল্ল,
- ১৯৩৭ হারানিধি;
- ১৯৫৪ প্রফুল্ল,
- ১৯৮২ প্রফুল্ল
- ১৯৩৬ অন্নপূর্ণার মন্দির (গান),
- ১৯৫০ যুগদেবতা (গান), মহাকবি গিরিশচন্দ্র (গান);
- ১৯৮১ সুবর্ণলতা (গান);
- ১৯৮২ প্রযুম। গিরিশচন্দ্রকে নিয়ে উৎপল দত্তর ‘গিরিশ মানস’ উল্লেখযোগ্য রচনা।
আরও দেখুনঃ