তিমির বরণ ভট্টাচার্য ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সরোদশিল্পী ও ভারতীয় বৃন্দবাদনের অন্যতম পথিকৃৎ। তিমির বরণের জন্ম অবিভক্ত বাংলার অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের বড়বাজারের শিব ঠাকুর লেনের তন্ত্রসাধক ভট্টাচার্য পরিবারে। অল্প বয়স থেকেই সংগীত অনুরাগী, নিজেও অত্যন্ত ভালো সরোদ বাজাতেন। সংগীত শিক্ষার শুরুতে রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামীকে শুরু হিসেবে পেয়েছিলেন। পরবর্তী কালে মাইহার ঘরানার ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র কাছে সরোদ শিক্ষা লাভ করেন।
তিমির বরণ ভট্টাচার্য
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে ‘মাইহার ব্যান্ড’-এর অনুপ্রেরণায় তিনি অগ্রজ ও বাড়ির ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি ‘ফ্যামিলি অর্কেস্ট্রা’র দল গড়ে তোলেন। সেই সাথে উদয়শঙ্কর-এর নাচের দলে যোগ দেন। ঐ দলের সাথে ইউরোপ ও আমেরিকা ভ্রমণ করেন। তাঁর বাজনার সাথে উদয়শঙ্কর সম্প্রদায়ের নাচ উচ্চ প্রশংসা লাভ করে।
১৯৩৪ সালে তিনি মধু বসু-র নাট্য সংস্থা কলকাতা আর্ট প্লেয়ার্স-এর সাথে যুক্ত হন, এবং আলিবাবা, বিদ্যুৎপর্ণা ইত্যাদি গীতিনাট্যের সংগীত পরিচালনা করেন। ১৯৩৫ সালে নিউ থিয়েটার্সে যোগ দেন এবং দেবদাস (হিন্দী ১৯৩৫), পূজারিন (হিন্দী ১৯৩৮) ছবির সংগীত পরিচালনা করেন।
প্রথম বাংলা ছবিতে সংগীত পরিচালনা বিজয়া (১৯৩৬)। ছবিটি নিউ ইন্ডিয়া ফিল্মস-এর প্রযোজনায় এবং দীনেশরঞ্জন দাসের পরিচালনায় নির্মিত। ১৯৩১ সালে বম্বে চলে যান এবং সাগর ফিল্ম কোম্পানি ও ওয়াদিয়া মুডীটোনে কিছুদিন কাজ করেছিলেন। পরে কিছুদিন কলকাতা বেতার কেন্দ্রেও কাজ করেছেন। ৬০-এর দশকে তিমিরবরণ শান্তিনিকেতনে সংগীত শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।

প্রকাশনা—
উদয়শঙ্কর ও তাঁর সম্প্রদায়ের সাথে ভ্রমণকালে তার ধারাবাহিক লেখাগুলি পরবর্তীকালে সংকলিত হয়ে উদয়পথের সহযাত্রী’ নামে প্রকাশিত হয়।
চলচ্চিত্রপঞ্জি —
- ১৯৩৬ বিজয়া
- ১৯৩৮ অচিন প্রিয়া:
- ১৯৩৯ অধিকার,
- ১৯৪০ কুমকুম:
- ১৯৪১ রাজনর্তকী, উত্তরায়ণ
- ১৯৪৪ সমাজ:
- ১৯৪৫ বন্দিতা,
- ১৯৪৮ দৃষ্টিদান
- ১৯৫০ দু’ধারা
- ১৯৫১ দত্তা;
- ১৯৫২ আলাদিন ও আশ্চর্য প্রদীপ, নতুন পাঠশালা,
- ১৯৫৯ বিচারক
- ১৯৬৫ থানা থেকে আসছি,
- ১৯৭০ দিবারাত্রির কাব্য:
- ১৯৭৮ ডাক দিয়ে যাই।
আরও দেখুনঃ