বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নাম শায়না আমিন, যাঁর পুরো নাম মাহমুদা আমিন শায়না। সাবলীল অভিনয়, মিষ্টি হাসি ও পরিশ্রমী মানসিকতা তাঁকে করে তুলেছে দর্শকদের কাছে আপনজন। নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপন, মডেলিং—সবখানেই তিনি নিজস্ব উপস্থিতি দিয়ে ছাপ ফেলেছেন। শুধু পর্দায় নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি এক সংগ্রামী ও আত্মবিশ্বাসী নারীর প্রতীক।
প্রাথমিক জীবন ও শৈশব
বিষয় | তথ্য |
পূর্ণ নাম | মাহমুদা আমিন শায়না |
জন্ম তারিখ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ |
জন্মস্থান | মক্কা, সৌদি আরব |
পিতা | নুরুল আমিন (ব্যবসায়ী) |
মাতা | গৃহিণী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
বর্তমান ঠিকানা | লন্ডন, যুক্তরাজ্য |
মাত্র দেড় বছর বয়সে শায়না তাঁর পরিবারসহ বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ঢাকার লালমাটিয়া এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া এবং শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া।
নৃত্যচর্চা ও শিল্পকলার প্রতি আগ্রহ
ছোটবেলা থেকেই শায়নার ঝোঁক ছিল শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি। তিনি প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ-এর কাছে নৃত্যের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ভর্তি হন ‘নৃত্যাঙ্গন’ একাডেমিতে, যেখানে তিনি নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতেন। নৃত্যচর্চার এই ভিত্তিই তাঁর আত্মবিশ্বাস, শৃঙ্খলা ও শৈল্পিকতা গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছিল।
শিক্ষা জীবন
শায়না লালমাটিয়া মহিলা কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতক (অনার্স) সম্পন্ন করেছেন। পড়াশোনায় ছিলেন মনোযোগী ও ধারাবাহিক। শিল্পচর্চার পাশাপাশি তিনি একাডেমিক দিক থেকেও নিজেকে তৈরি করেছেন, যা তাঁর ব্যালান্সড জীবনের প্রতিফলন।
অভিনয় জীবন শুরু: নাটক ও টেলিফিল্মে আত্মপ্রকাশ
শায়নার অভিনয় জীবন শুরু হয় ২০০৬ সালে, বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত নাটক ‘ক্রস কানেকশন’ দিয়ে। এর পরপরই তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
বছর | নাটক / টেলিফিল্ম |
২০০৬ | ক্রস কানেকশন |
২০০৮ | প্রেমের অঙ্ক, মন উচাটন |
২০১১ | লাইফ ইজ বিউটিফুল, লোকালয়, ভিআইপি, আবু করিম |
২০১২ | প্রিয় মা |
২০১৩ | অন্তহীন, আঁধারের বাসিন্দা |
২০১৪ | মাই এক্স গার্লফ্রেন্ড, সাধারণ জ্ঞান, সেলফি ম্যানিয়া |
২০১৫ | এক পশলা বৃষ্টি |
শায়নার অভিনয়ে ছিল একধরনের নাটকীয় স্বাভাবিকতা—যা তাঁকে করে তোলে সময়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রীদের একজন।
চলচ্চিত্র জীবন: বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ ও সাফল্য
২০১১ সালে গৌতম ঘোষ পরিচালিত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘মেহেরজান’-এর মাধ্যমে শায়নার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। ছবিতে তিনি অভিনয় করেন কিশোরী মেহেরজান চরিত্রে, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মেহেরজান চরিত্রে ছিলেন জয়া বচ্চন।
চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি প্রেমকাহিনি ঘিরে নির্মিত হয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর শায়না আরও দুটি ছবিতে অভিনয় করেন:
বছর | চলচ্চিত্র | পরিচালক |
২০১১ | মেহেরজান | গৌতম ঘোষ |
২০১২ | পিতা | মাসুদ আকন্দ |
২০১৫ | পুত্র এখন পয়সাওয়ালা | নার্গিস আক্তার |
- ‘পিতা’ ছিল একটি সমাজ সচেতনতামূলক চলচ্চিত্র, যেখানে শায়নার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
- ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ ছিল একটি বাণিজ্যিক ঘরানার চলচ্চিত্র, যা তৎকালীন বক্স অফিসে সফলতা পায়।
বিজ্ঞাপন ও মডেলিং: গ্ল্যামারের আরেক অধ্যায়
শায়না আমিন মডেলিংয়ে যাত্রা শুরু করেন বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে। তাঁর মিষ্টি চেহারা ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি তাঁকে করে তোলে বিজ্ঞাপন দুনিয়ার পছন্দের মুখ। তিনি কাজ করেছেন বহু নামীদামী ব্র্যান্ডের সঙ্গে।
ব্র্যান্ড / পণ্য | বছর (যদি জানা যায়) |
সানসিল্ক শ্যাম্পু | ২০০৫ |
আরকু গুঁড়া মশলা | — |
প্রাণ চাটনী | — |
রেক্সোনা | — |
কিউট বিউটি সোপ | — |
সৌরভ মেহেদি | — |
তিব্বত ক্রীম ও তেল | — |
প্যারাসুট নারিকেল তেল | — |
আপন জুয়েলার্স | — |
এই বিজ্ঞাপনগুলো তাঁকে করে তোলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন দুনিয়ার পরিচিত মুখ।
মিউজিক ভিডিও: এক ঝলক ‘এক জীবন’
২০১১ সালে শহীদ ও শুভমিতা’র গাওয়া গান ‘এক জীবন’-এর মিউজিক ভিডিওতে শায়নার উপস্থিতি দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। গানটি ছিল প্রচণ্ড জনপ্রিয় এবং ইউটিউবে বাংলাদেশি মিউজিক ভিডিওর ইতিহাসে অন্যতম সর্বাধিক দেখা ভিডিওগুলোর মধ্যে একটি।
এই মিউজিক ভিডিওই তাঁকে দেশের তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ব্যক্তিগত জীবন: পর্দার বাইরে এক নিবেদিত মা ও সঙ্গিনী
বিষয় | তথ্য |
প্রথম স্বামী | আসাদুজ্জামান সেতু (বিবাহ: ২০১১, বিচ্ছেদ: ২০১৪) |
দ্বিতীয় স্বামী | মাসুদ রানা (লন্ডনপ্রবাসী) |
কন্যা | আরশিয়া (জন্ম: ৯ ডিসেম্বর ২০১৫) |
পুত্র | নুমাইর আমিন রানা (জন্ম: ১৩ নভেম্বর ২০১৮) |
বর্তমানে শায়না যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তাঁর পরিবারসহ বসবাস করছেন। সেখান থেকেই তিনি মাঝে মাঝে অভিনয় ও মডেলিংয়ের কাজে বাংলাদেশে আসেন।
পর্দার গ্ল্যামারাস এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে একান্ত ঘরোয়া, পরিবারপ্রেমী এবং নিভৃতচারী।
চলচ্চিত্র জীবন: বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ ও সাফল্য
২০১১ সালে গৌতম ঘোষ পরিচালিত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘মেহেরজান’-এর মাধ্যমে শায়নার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। ছবিতে তিনি অভিনয় করেন কিশোরী মেহেরজান চরিত্রে, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মেহেরজান চরিত্রে ছিলেন জয়া বচ্চন।
চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি প্রেমকাহিনি ঘিরে নির্মিত হয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
এরপর শায়না আরও দুটি ছবিতে অভিনয় করেন:
বছর | চলচ্চিত্র | পরিচালক |
২০১১ | মেহেরজান | গৌতম ঘোষ |
২০১২ | পিতা | মাসুদ আকন্দ |
২০১৫ | পুত্র এখন পয়সাওয়ালা | নার্গিস আক্তার |
- ‘পিতা’ ছিল একটি সমাজ সচেতনতামূলক চলচ্চিত্র, যেখানে শায়নার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
- ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ ছিল একটি বাণিজ্যিক ঘরানার চলচ্চিত্র, যা তৎকালীন বক্স অফিসে সফলতা পায়।
বিজ্ঞাপন ও মডেলিং: গ্ল্যামারের আরেক অধ্যায়
শায়না আমিন মডেলিংয়ে যাত্রা শুরু করেন বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে। তাঁর মিষ্টি চেহারা ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি তাঁকে করে তোলে বিজ্ঞাপন দুনিয়ার পছন্দের মুখ। তিনি কাজ করেছেন বহু নামীদামী ব্র্যান্ডের সঙ্গে।
ব্র্যান্ড / পণ্য | বছর (যদি জানা যায়) |
সানসিল্ক শ্যাম্পু | ২০০৫ |
আরকু গুঁড়া মশলা | — |
প্রাণ চাটনী | — |
রেক্সোনা | — |
কিউট বিউটি সোপ | — |
সৌরভ মেহেদি | — |
তিব্বত ক্রীম ও তেল | — |
প্যারাসুট নারিকেল তেল | — |
আপন জুয়েলার্স | — |
এই বিজ্ঞাপনগুলো তাঁকে করে তোলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন দুনিয়ার পরিচিত মুখ।
মিউজিক ভিডিও: এক ঝলক ‘এক জীবন’
২০১১ সালে শহীদ ও শুভমিতা’র গাওয়া গান ‘এক জীবন’-এর মিউজিক ভিডিওতে শায়নার উপস্থিতি দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। গানটি ছিল প্রচণ্ড জনপ্রিয় এবং ইউটিউবে বাংলাদেশি মিউজিক ভিডিওর ইতিহাসে অন্যতম সর্বাধিক দেখা ভিডিওগুলোর মধ্যে একটি।
এই মিউজিক ভিডিওই তাঁকে দেশের তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ব্যক্তিগত জীবন: পর্দার বাইরে এক নিবেদিত মা ও সঙ্গিনী
বিষয় | তথ্য |
প্রথম স্বামী | আসাদুজ্জামান সেতু (বিবাহ: ২০১১, বিচ্ছেদ: ২০১৪) |
দ্বিতীয় স্বামী | মাসুদ রানা (লন্ডনপ্রবাসী) |
কন্যা | আরশিয়া (জন্ম: ৯ ডিসেম্বর ২০১৫) |
পুত্র | নুমাইর আমিন রানা (জন্ম: ১৩ নভেম্বর ২০১৮) |
বর্তমানে শায়না যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তাঁর পরিবারসহ বসবাস করছেন। সেখান থেকেই তিনি মাঝে মাঝে অভিনয় ও মডেলিংয়ের কাজে বাংলাদেশে আসেন।
পর্দার গ্ল্যামারাস এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে একান্ত ঘরোয়া, পরিবারপ্রেমী এবং নিভৃতচারী।
অন্যান্য তথ্য ও আগ্রহ
শায়না আমিন শুধু অভিনয় বা মডেলিংয়ে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মনোযোগ ছিল সাহিত্য, সংগীত ও চিত্রকলার প্রতি। একাধারে তিনি ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী, শিল্পানুরাগী এবং সৌন্দর্য-সচেতন মনের মানুষ।
- তিনি কিছু দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা তাঁর মডেলিং জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
- শৈল্পিক বিষয়ে তাঁর আগ্রহ তাঁকে করে তোলে অনন্য জীবনবোধসম্পন্ন শিল্পী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা:
- শায়না নিয়মিত ভক্তদের সঙ্গে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন।
- তাঁর পোস্টগুলোতে দেখা যায় পারিবারিক মুহূর্ত, সন্তানদের নিয়ে সময়, থ্রো-ব্যাক ফটো, মডেলিং শুট এবং সামাজিক বার্তা।
এই মাধ্যমেই তিনি তাঁর শিল্পীসত্তা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন।
ম্যাগাজিন কাভার
- ২০১৪ সালের ‘স্প্ল্যাশ ফ্যাশন ম্যাগাজিন’-এর জানুয়ারি সংখ্যায় তিনি কাভার মডেল হিসেবে জায়গা করে নেন।
- কাভারটির শিরোনাম ছিল: “The Grace of Simplicity: Shayna Amin” — যা তাঁর স্বভাব, সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি।

শায়না আমিন সেই শিল্পী, যিনি পেশার প্রতিটি স্তরে তাঁর প্রতিভা, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপন, সিনেমা, মিউজিক ভিডিও—সবক্ষেত্রেই তাঁর ছাপ রয়েছে সূক্ষ্ম কিন্তু দৃঢ়ভাবে।
অভিনয়ে যেমন তিনি ছিলেন সাবলীল, তেমনি ব্যক্তি জীবনে ছিলেন স্থিতিশীল, আত্মনির্ভর ও সংযমী। বাংলা বিনোদন জগতে তাঁর অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
তিনি প্রমাণ করেছেন—
“একজন নারী শিল্পী নিজের মেধা, শিক্ষা ও ধৈর্য দিয়ে সব বাধা পেরিয়ে এক নিঃশব্দ জয়গাথা লিখতে পারেন।”
আজ তিনি লন্ডনে থাকলেও, তাঁর ভক্তরা বাংলাদেশের প্রতিটি প্রজন্মেই তাঁর সৌন্দর্য, স্বভাব ও সৃজনশীলতাকে মনে রাখবে গভীর শ্রদ্ধায়।