অভিনয় জগৎ ও অভিনেতা

অভিনয় জগৎ ও অভিনেতা : অভিনয় এমন এক ধরণের কাজ, যেখানে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী একটি চরিত্র ধারণ করেন। এরপর সেই চরিত্র হয়ে – থিয়েটার, টেলিভিশন, ফিল্ম, রেডিও বা অন্য কোনও মাধ্যমে আমাদের গল্প বলেন। যে কটি জটিল সৃষ্টিশীল শিল্পমাধ্যম আছে, তার মধ্যে অভিনয় প্রথম সারিতে। অভিনয় এমন একটি শিল্প, যেখানে অন্য আরও অনেক শিল্প ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অভিনয় এখন একটি বড় শিল্প। তবে কিছুদিন আগে পর্যন্ত মঞ্চ, টিভি নাটক, সিনেমা আর কিছু বিজ্ঞাপনে অভিনয় শিল্প সীমিত ছিল। কিন্তু ইন্টারনেটের অগ্রগতির ফলে এখনো ওটিটি সহ নানামুখী আউটলেট তৈরি হয়েছে। তাই অভিনয় শিল্পের ব্যাপ্তিও অনেক বেড়ে গেছে। ক্রমশ বাড়ছে অভিনেতাদের জন্য কাজ আর নতুন নতুন অভিনেতার চাহিদা।

 

অভিনয় গুরুকুল

অভিনয় জগৎ ও অভিনয়ের ইতিহাস :

ইতিহাসে প্রথম অভিনেতা হিসেবে যার নাম জানা যায় তিনি একজন প্রাচীন গ্রীক, এথেন্স এর “থেস্পিস অফ ইকারিয়া” নামে। তার দুই শতাব্দী পরে, অ্যারিস্টটল তার পোয়েটিক্সে লিখেছিলেন যে, থেস্পিস ডিথাইরাম্বিক কোরাস থেকে বেরিয়ে এসে, একটি পৃথক উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি নিজের চরিত্র প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করেছেন। থেস্পিস আগে “ডায়োনিসাস” নামে একটি ভিন্ন চরিত্রের কথা বলতেন তার অভিনয়ে। পরের উদ্যোগে তিনি নিজেকে ডায়োনিসাস হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একই সময় ভারতেও অভিনেতাদের গল্প প্রচলিত আছে যা মূলত নৃত্য-গীত নির্ভর। তাই গ্রীক বা প্রাচীন ভারতের সময় থেকেই অভিনয় একটি প্রচলিত এবং স্বীকৃত শিল্প ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো।

চলচ্চিত্রের যুগ পর্যন্ত অভিনয়ে বিবর্তন খুব বেশি হয়েছে বলে বলা যায় না। পেশাদারী থিয়েটার থাকলেও সেখানে মূলত ক্লাসিক্যাল এক্টিং এর ধারাই চলছিলো। সবাক চলচ্চিত্র আসার পরে অভিনয়-শৈলী, পেশাদারিত্ব সবকিছু মিলিয়ে খোলনলচে পালটে যায়। তৈরি হয় অভিনয়-শৈলী স্কুল। স্ট্যানিস্লাভস্কি, চেকভ, মেইসনারের মতো লোকজন স্বতন্ত্র অভিনয় শৈলী উদ্ভাবন করেন। সেসব অভিনয় শৈলী শেখাবার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়। সব মিলিয়ে অভিনয়ে রেনেসাঁ ঘটে উনিশ শতকে। সেই ধারাগুলোর উপরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অভিনয় শিল্প আজও এগিয়ে চলেছে।

 

কনস্ট্যান্টিন স্ট্যানিস্লাভস্কির মেথড অ্যাক্টিং আমেরিকায় আসা ও আজকের হলিউড:

১৯২০ এর দশকের গোড়ার দিকে, মস্কো আর্ট থিয়েটার থেকে একটি বিশ্ব ভ্রমণের উদ্যোগ নেয়া হয়। আমেরিকায় কাজ শেষে যাবার সময় ট্রুপের বেশ কয়েকজন সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যান এবং লি স্ট্রাসবার্গ এবং স্টেলা অ্যাডলারকে নির্দেশনা দিতে থাকেন। এই লি স্ট্রাসবার্গ এবং স্টেলা অ্যাডলার পরে তাদের নিজস্ব অভিনয় স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

 

অভিনয় গুরুকুল

 

লি স্ট্রাসবার্গের মেথড অ্যাক্টিং সংস্করণে অভিনয়ে বাস্তবসম্মত আবেগ আনতে অভিনেতাকে অতীতের অভিজ্ঞতা “সেন্স মেমরি” ড্রেজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। লি স্ট্রাসবার্গের স্কুলে পড়াশোনা করা বিখ্যাত অভিনেতাদের মধ্যে আছেন – জেমস ডিন, আল পাচিনো, পল নিউম্যান এবং ডাস্টিন হফম্যান। তার স্কুলে এখনো তার উন্নয়ন করা কৌশলগুলি পড়ায় তার সাবেক শিক্ষার্থী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, স্কারলেট জোহানসন এবং স্টিভ বুসেমি প্রমুখ।

অন্যদিকে স্টেলা অ্যাডলার নিজের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিও “স্ট্যানিস্লাভস্কির” পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছিলেন। স্টেলা স্ট্যানিস্লাভস্কির সাথে দেখা করার জন্য প্যারিসে যান। সেখানে গুরুর কাছ থেকে জানতে পারেন যে গুরু চিন্তায় আরও অনেক খানি এগিয়েছেন। স্ট্যানিস্লাভস্কির “সেন্স মেমরি” থেকে এগিয়ে অভিনেতার কল্পনাপ্রসূত অনুপ্রেরণার ব্যবহার করার কৌশল নিয়েও আলোচনা করেন। স্টেলা অ্যাডলারের কাছে শেখা বিখ্যাত অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছে মারলন ব্র্যান্ড, রবার্ট ডিনিরো এবং হার্ভে কিটেল। এছাড়া অন্যান্য অভিনেতা যারা অ্যাডলারের কৌশল ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে রয়েছে – জুড নেলসন, মার্টিন শিন, অ্যান্টনি কুইন, সালমা হায়েক, মার্ক রাফালো এবং ক্রিস্টোফার গেস্ট।

যে জিনিসটা “মেথড এক্টিং” কে এত জনপ্রিয় করে তুলেছিল, সেটা হল এটি বড় পর্দায় প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিস্তারিত দেখার সুযোগ, জুম করে দেখাবার সুযোগ। একটি চোখের পাপড়ির নড়াচড়া জুম করে ধরে সারা হলের দর্শক কে কাঁদানো যেত। এই সুযোগ অভিনয় জগতে এর আগে আসেনি।

কনস্ট্যান্টিন স্ট্যানিস্লাভস্কির শিক্ষা একটি পরাম্পরায় রুপ নেয়। একটি পরিবারের মতো হয়ে বাড়তে থাকে। আজকের হলিউডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেখে গেছেন রাশিয়ার অভিনয়ের প্রবাদপুরুষ কনস্ট্যান্টিন স্ট্যানিস্লাভস্কি।

 

অভিনয়ের ধরণ:

ক্লাসিক্যাল এ্যক্টিং বা ধ্রুপদী অভিনয় শৈলী:

আগে মাইক বা কৃত্রিম ভাবে শব্দ বাড়ানোর কোন ব্যবস্থা ছিল না। তাই সেসময়ের মঞ্চে অভিনয়ের সময় থিয়েটারের পিছনে দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য অতিরিক্ত নাটকীয় অঙ্গভঙ্গি, অতিরঞ্জিত ক্রিয়া এবং টানা বক্তৃতা প্রয়োজন হতো। ১৯২০ এর দশকের শেষের দিকে, সবাক ছবির আবির্ভাবের সাথে, এই ধরনের ওভারঅ্যাক্টিং জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। তখন এই ধরণের অভিনেতারা এই অভিনয় ধারাকে “ক্লাসিক্যাল অ্যাক্টিং” বা নিজেদেরকে “ক্লাসিক্যাল এক্টর” হিসাবে পরিচয় দেয়া শুরু করে। তবে সেই সময়ে অনেক ক্লাসিকাল এক্টর নিজেদেরকে পরিবর্তিত করে ক্রমশ পরিবর্তিত যুগের “আধুনিক অভিনয়” এ চলে আসেন। অনেক বিখ্যাত অভিনেতারা এই ঘরানার অভিনয়ের মধ্যে তৈরি হয়েছেন, যেমন : রিচার্ড অ্যাটেনবরো, অ্যালান বেটস, রিচার্ড বার্টন, বেট ডেভিস, উইলিয়াম শ্যাটনার এবং প্যাট্রিক স্টুয়ার্ট।

 

অভিনয় জগৎ ও অভিনেতা

 

আধুনিক অভিনয় :

আধুনিক অভিনয় কৌশল কনস্ট্যান্টিন স্ট্যানিস্লাভস্কি থেকে উদ্ভূত। স্ট্যানিস্লাভস্কি ছিলেন একজন রাশিয়ান অভিনেতা এবং পরিচালক এবং মস্কো আর্ট থিয়েটারের প্রধান ব্যক্তি। ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে, স্ট্যানিস্লাভস্কি একটি “অভিনয় শৈলী” তৈরির উদ্যোগ নেন। এই শৈলীর বিশেষত্ব হচ্ছে “অভিনেতারা তার চরিত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতায় মানসিক (এবং যতটা সম্ভব শারীরিক) ভাবে বসবাসের মাধ্যমে চরিত্রটিকে ধারণ করবেন। এভাবে চরিত্রটি ধারণ করলে তার অভিনয় অত্যন্ত স্বাভাবিক হবে এবং স্বভাবগত মনে হবে। যে এক্সপ্রেশন আসবে তা মনে হবে ওই ব্যক্তির নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আসছে। এই অভিনয় পদ্ধতিকে “মেথড এক্টিং” বলা হয়ে থাকে।

অভিনয়ে মোটাদাগে ভাগ এই দুটিই। তবে স্ট্যানিস্লাভস্কি ছাড়া আর দুটো অধুনিক ঘরানা সম্পর্কে আমাদের সাধারণ জানাশোনা থাকা দরকার। তার একটি মেইসনার টেকনিক, অন্যটি চেকভ টেকনিক।

 

মেইসনার টেকনিক:

মেইসনার টেকনিক বিশ্বাস করে বারবার অনুশিলণে। অর্থাৎ শিল্পীকে বারবার অনুশিলনের মধ্য দিয়ে তার “অচেতন প্রবৃত্তির” উন্নয়ন করতে থাকা যার মাধ্যমে সত্য ও সেরা অভিনয়টি বেরিয়ে আসবে। এটা অনেকখানি কুংফুর মতো বিষয়। বিখ্যাত অভিনেতা যারা মেইসনার অভিনয় কৌশল নিযুক্ত করেন তাদের মধ্যে রয়েছে অ্যামি শুমার, ডায়ান কিটন, গ্রেস কেলি, জেমস গ্যান্ডলফিনি এবং রবার্ট ডুভাল।

 

চেকভ টেকনিক :

চেকভ অভিনয় কৌশলে মূলত অভিনেতাদের সর্বজনীন সহবোধ্য অঙ্গভঙ্গি শেখানো হয়। অর্থাৎ সার্বজনীন পরিচিত অঙ্গভঙ্গিতে অভিনয় করা। বিভিন্ন ধরণের চরিত্রের সবার পরিচিত অঙ্গভঙ্গিগুলো রপ্ত করা এবং সেগুলো ব্যবহার করে অভিনয় করে যাওয়া। যার মাধ্যমে যেকোনো শিল্পী অভিনয়ের ভাষাটা রপ্ত করতে পারলেই অভিনয় করতে পারবেন। চেকভ অভিনয় কৌশল ব্যবহার করা বিখ্যাত অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছে ক্লিন্ট ইস্টউড, প্যাট্রিসিয়া নিল, জনি ডেপ, হেলেন হান্ট এবং জ্যাক নিকলসন।

Google News অভিনয় জগৎ ও অভিনেতা
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

আসলে সমস্ত মেথড অ্যাক্টিং কৌশল ঘুরে ফিরে একই জিনিস করাবার চেষ্টা করে, তা হলো চরিত্রের সাথে জীবন যাপন, আর তার মাধ্যমে চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তোলা। মেথড অ্যাক্টিং একটি দৃশ্যের পরিস্থিতির উপর জোর দেয় এবং অভিনেতাকে পরিস্থিতির সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোর উপরে ভিত্তি করে যৌক্তিক স্বাভাবিক আচরণ দাবী করে। অভিনেতা কীভাবে সেটা খুঁজে নেবেন তার উপর বিভিন্ন অভিনয় পদ্ধতি প্রশিক্ষণ দেয়।

মেথড অভিনেতারা তাদের চরিত্রের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে অনেক সময় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজও করেন। যেমন রবার্ট ডিনিরো নিজেকে ট্যাক্সি ড্রাইভার চরিত্রের জন্য প্রস্তুত করতে আসলেই দিনে ১২ ঘণ্টা করে কিছুদিন ক্যাব চালিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি তার চরিত্রে নিমগ্ন ছিলেন, তিনি তার বেশ কয়েকটি লাইন বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, যার মধ্যে “তুমি আমার সাথে কথা বলছ?” বিখ্যাত আয়নার দৃশ্যে।

 

অভিনেতা হবার যোগ্যতা, দক্ষতা ও গুনাগুণ :

ভালো অভিনেতা হবার জন্য অনেক গুলো যোগ্যতা, দক্ষতা এবং গুনাগুণ থাকা জরুরী। প্রথম যোগ্যতাটি হলো সৃষ্টিশীলতা। অর্থাৎ সৃষ্টিশীল মানুষ ছাড়া অভিনয় সম্ভব নয়। অর্থাৎ প্রয়োজন সু-বিকশিত কল্পনাশক্তি থাকা দরকার। তাছাড়া অভিনয় মানে আবেগের খেলা, চরিত্রের আবেগ কে নিজের মধ্যে অনুভব করা এবং সেটা ফুটিয়ে তোলা। তাই সেই আবেগ অনুভব করার মানসিক ক্ষমতাও জরুরী। অভিনয় অত্যন্ত শরীর নির্ভর শিল্প। তাই সাবলীল শারীরিক অভিব্যক্তিও প্রয়োজন। এর মধ্যে কিছু আছে ন্যাচারাল এবং কিছু চর্চা করে তৈরি করতে হয়।

যেমন কথার কথার স্বচ্ছতা, গল্পের ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা, অভিনয়ের জন্য উপভাষা, উচ্চারণ, ইমপ্রোভাইজেশন, পর্যবেক্ষণ এবং অনুকরণ ইত্যাদি দরকার হয়। অভিনয়ে কণ্ঠ প্রক্ষেপণ বা সর্বোপরি কণ্ঠের ব্যবহার একটি জরুরী বিষয়। এছাড়া উচ্চারণ সহ অন্যান্য যোগ্যতার বিষয় তো রয়েছে। তবে এই সব কিছু যদি কারও মধ্যে কিছু পরিমাণে থাকে, আর তার অভিনয় শিল্পের প্রতি আন্তরিকতা থাকে, তবে নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে অনেকখানি উন্নয়ন করে নেয়া যায়।

 

অভিনেতা প্রশিক্ষণ:

অভিনেতা এক সময় প্রশিক্ষণ জরুরী ছিল না। প্রকৃতিগত-ভাবে অনেকেই অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এরপরে কাজ করতে করতে নিজেকে উন্নীত করেছেন। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার যুগে প্রশিক্ষণ ছাড়া ভালো করা সম্ভব নয়। এজন্যই অভিনেতা তৈরির জন্য দেশে বিদেশে নানা রকম প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। শুধুমাত্র শর্ট কোর্সই নয়, পুরোপুরি অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রিও অফার করা হয় অভিনেতা প্রস্তুত করার জন্য।

 

অভিনয় গুরুকুল

 

কনজারভেটরি এবং ড্রামা স্কুলগুলি সাধারণত অভিনয়ের সমস্ত দিকগুলিতে দুই থেকে চার বছরের প্রশিক্ষণ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বেশিরভাগই তিন থেকে চার বছরের প্রোগ্রাম অফার করে, যেখানে একজন শিক্ষার্থী প্রায়শই থিয়েটারের অন্যান্য দিকগুলি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নেবার সময়েই অভিনয়ের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে। স্কুলগুলি তাদের পদ্ধতি অভিজ্ঞতার সাথে সাথে পরিবর্তন করে। উত্তর আমেরিকায় শেখানো সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতিটি কনস্ট্যান্টিন স্ট্যানিস্লাভস্কির ‘সিস্টেম’ কে অনুসরন করে গড়ে উঠেছে, যেটি লি স্ট্রাসবার্গ, স্টেলা অ্যাডলার, স্যানফোর্ড মেইসনার এবং অন্যান্যদের অভিনয় পদ্ধতি হিসাবে আমেরিকায় জনপ্রিয় হয়েছিল।

অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে আরও শারীরিক অভিযোজন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যেমন অ্যান বোগার্ট, জ্যাক লেকোক, জের্জি গ্রোটোস্কি, বা ভেসেভোলড মেয়ারহোল্ডের মতো বৈচিত্র্যময় থিয়েটার অনুশীল। ক্লাসের মধ্যে সাইকোটেকনিক, মাস্ক ওয়ার্ক, ফিজিক্যাল থিয়েটার, ইম্প্রোভাইজেশন এবং ক্যামেরার জন্য অভিনয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

স্কুলের পদ্ধতি নির্বিশেষে, শিক্ষার্থীদের পাঠ্য ব্যাখ্যা, কণ্ঠস্বর এবং আন্দোলনের নিবিড় প্রশিক্ষণের দেয়া হয়। নাটকের প্রোগ্রাম এবং কনজারভেটরিতে অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ও বিস্তারিত অডিশন নেয়া হয়। তবে ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ সাধারণত আবেদন করতে পারেন। খুব অল্প বয়সে প্রশিক্ষণ শুরু করাই ভালো। এখন অনূর্ধ্ব ১৮ বছরের জন্য অভিনয় ক্লাস এবং পেশাদার স্কুলগুলিও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এই স্কুলগুলো দৃশ্য অধ্যয়ন সহ, অভিনয় এবং থিয়েটারের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে তরুণ অভিনেতাদের পরিচয় করিয়ে দেয়।

 

বাংলাদেশে অভিনয়ে লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ:

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নাটক ও নাট্যতত্ব বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বচ্চ ডিগ্রি নেবার সুযোগ রয়েছে। যারা সেখানে পড়েন নি, তাদের জন্য অপশন রয়েছে থিয়েটার স্কুলগুলো। বাংলাদেশে যেসব থিয়েটার স্কুল সক্রিয় রয়েছে তা হলো – আবদুল্লাহ আল–মামুন থিয়েটার স্কুল, প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইন, নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইন্সটিটিউট অব ড্রামা’য় (এনএনআইডি), বটতলা অ্যাক্টরস স্টুডিও, চারুনীড়ম স্কুল অব অ্যাক্টিং থিয়েটার। অনলাইনে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। তবে এমেচারদের জন্য প্রতিটি জেলার শিল্পকলা প্রাথমিক প্রশিক্ষণ স্কুল হিসেবে সহায়তা করতে পারে।

 

আও পড়ুন:

Leave a Comment