তানিয়া আহমেদ হলেন একজন বাংলাদেশী মডেল, অভিনেত্রী, পরিচালক ও উপস্থাপিকা। মডেলিং দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হলেও পরে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন। সেকু সিকান্দার নাটকে মৈরন ও রঙের মানুষ নাটকে মাঞ্জেলা চরিত্র দুটি তাকে পরিচিতি দেয়। পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি গানের ভিডিও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন।
তানিয়া আহমেদ সম্পর্কে কিছু তথ্য
নাম | তাসনিয়া ইসলাম |
জন্মস্থান | পটুয়াখালী |
জন্ম | ৫ই জুন ১৯৭২ |
পেশা | মডেল, অভিনেত্রী, পরিচালক ও উপস্থাপিকা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
ধর্ম | ইসলাম |
পরিচালিত ১ম চলচ্চিত্র | ভালবাসা এমনি হয় |
জন্ম
তানিয়া আহমেদ ১৯৭২ সালের ৫ই জুন পটুয়াখালীতে জন্মগ্রহন করেন। তানিয়া আহমেদের পৈতৃক নিবাস পটুয়াখালী জেলার কলাপড়া থানার লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে। তার ছোট ভাই অমিতাভ আহমেদ রানাও একজন নাট্য পরিচালক।
কর্মজীবন
মডেলিং ও টেলিভিশন: ১৯৯৩-৯৮
তানিয়ার কর্মজীবন শুরু হয় মডেলিং দিয়ে। শুরুতে তিনি মডেলিং করতে চাননি। কিন্তু তার এক বন্ধু তার পুরনো ছবি দেখে তাকে মডেলিং শুরু করতে বলেন এবং তার ছবি আফজাল হোসেনকে দেখান। আফজাল তাকে অডিশনের জন্য ডাকেন এবং তিনি অডিশনে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি প্রথম আফজাল নির্দেশিত ডায়মন্ড হেয়ার অয়েলের বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করেন।
১৯৯২ সালে সম্পর্ক নাটক দিয়ে তার টেলিভিশন পর্দায় অভিষেক হয়। নাটকটি পরিচালনা করেন ফারিয়া হোসেন। ১৯৯৭ সালে নন্দিত নাট্য নির্দেশক সাইদুল আনাম টুটুল পরিচালিত সেকু সিকান্দার নাটকে মৈরন চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সর্বপ্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
গানের ভিডিও পরিচালনা: ১৯৯৯-২০০৪
তানিয়া ১৯৯৯ সালে গানের ভিডিও পরিচালনা শুরু করেন। এই কাজে তাকে সাহায্য করেন তার ছোট ভাই রানা।এ সময়ে তিনি তিনটি গানের ভিডিওর অ্যালবাম পরিচালনা করেন। অ্যালবামগুলো হল মুহূর্ত, ময়নিস ও আর কত কাঁদাবে।তিনি জুয়েল, নিলয়, রাশেদ ও এস আই টুটুলের গানের ভিডিও পরিচালনা করেন, যা ২০০৪ সালের ঈদে চ্যানেল আই-তে প্রচারিত হয়। ২০০৪ সালে আসিফ আকবরের গাওয়া “উড়ো মেঘ” গানের ভিডিও নির্দেশনা দেন। এই ভিডিওতে চলচ্চিত্র অভিনেতা রিয়াজ সহ বেশ কয়েকজন নবীন শিল্পী কাজ করেন।

চলচ্চিত্রে আগমন: ২০০৪-২০০৭
২০০৪ সালে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্র দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পলায়নরত এক নৌকায় নারী ডাক্তার রাত্রি চরিত্রে তার অভিনয় বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বেও সামাদৃত হয়।
এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৪ ও ২০০৫ সালে তিনি ৬৯, বেলাভূমি, শ্রীকান্ত, আমাদের আনন্দবাড়ি, ঘুণপোকা, ও সুখনগর অ্যাপার্টমেন্ট নাটকে অভিনয় করেন।২০০৫ সালে তিনি সাইফুল ইসলাম মান্নু পরিচালিত সাপলুডু টেলিভিশন ধারাবাহিকে খল চরিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে তিনি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত মেড ইন বাংলাদেশ (২০০৭), হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত নয় নম্বর বিপদ সংকেত (২০০৭) চলচ্চিত্র, ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিশ্বরণ্যের নদী-তে কাজ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
তানিয়া ১৯৯৯ সালের ১৯শে জুলাই সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুলকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান শ্রেয়াশ আহমেদ ও আরশ আহমেদ। ২০২১ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তার পিতা জনাব নাসিম আহমেদ বিশ্বাস একজন অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি কর্মজীবনে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
পুরস্কার ও মনোনয়ন
- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬
- বাচসাস পুরস্কার ২০০৪
- মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০০৪, ২০০৭
- আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড
আরও দেখুনঃ