দোসর চলচ্চিত্রটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা- ২০০৬ সালে নির্মিত বাংলা ভাষায় নির্মিত ভারতীয় চলচ্চিত্র। এটি প্রযোজনা করেন অরিন্দম চৌধুরী (প্লানমান মোশন পিকচারস) এবং পরিচালনা করেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। এই সাদাকালো চলচ্চিত্রটিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত চরিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার -বিশেষ জুরি পুরস্কার/ লাভ করে। এই ছবির অভিনেত্রী কঙ্কনা সেন শর্মা ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করে। এই চলচ্চিত্রটি ২০০৭ সালে ৬০তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।
দোসর চলচ্চিত্র
- প্রযোজনা— প্ল্যানমেন মোশন পিকচার্স।
- প্রযোজক — অরিন্দম চৌধুরী।
- কাহিনি— শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
- চিত্রনাট্য ও পরিচালনা ঋতুপর্ণ ঘোষ।
- সম্পাদনা – অর্ধাকমল মিত্র।
- সংগীত পরিচালনা — ২১ গ্রামস।
- শব্দগ্রহণ — বিশ্বদীপ চট্টোপাধ্যায়।
- চিত্রগ্রহণ – অভীক মুখোপাধ্যায়।
- শিল্প নির্দেশনা – কৌশিক সরকার।
দোসর চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন —
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, কঙ্কনা সেনশর্মা, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তী, পল্লবী চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চ্যাটার্জী, শাশ্বত চ্যাটার্জী।
দোসর চলচ্চিত্রের কাহিনি—
কৌশিক (প্রসেনজিৎ) এবং কাবেরীর (কল্পনা) সুখী দাম্পত্য জীবনে আঘাত আনে কৌশিকের একটি আকস্মিক গাড়ি দুর্ঘটনা, শরীরে অনেকগুলি আঘাত নিয়ে কৌশিক নার্সিংহোমে ভর্তি হলেও গাড়িতে তার সহযাত্রী মিতা (চান্দ্রেয়ী) মারা যায়। কৌশিক বাড়িতে বলে গিয়েছিল অফিসের কাজে তাকে বাইরে যেতে হচ্ছে। জানা যায় মিতা ও কৌশিক একই অফিসে চাকরি করে এবং তারা একটা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। মিতার স্বামীও (শঙ্কর) এই বিষয়ে কিছুই জানত না।
কাবেরী একটি গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয় করত, সঙ্গে ববি (পরমব্রত) এবং বৃন্দা (পল্লবী)। বৃন্দা বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ববির সাথে একটা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। বৃন্দার ইচ্ছা ছিল ভবিষ্যতে ডিভোর্স করে সে ববিকে বিয়ে করবে যদিও ববি তার থেকে বয়সে কিছুটা ছোট। ববিরও এই বিয়েতে কোনো আপত্তি ছিল না বরং যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। হঠাৎ বৃন্দা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে, ববির মনে হয় এই সন্তানের জনক বৃন্দার স্বামীও হতে পারে, এই দোলাচলে সে বৃন্দার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে।
অন্যদিকে কাবেরী প্রাথমিক ভাবে স্থির করেছিল কৌশিকের সাথে বিবাহিত সম্পর্কের ছেদ টেনে দেবে, অবিশ্বাসী স্বামীর সাথে এক ছাদের তলায় থাকা সম্ভব নয়, কিন্তু কৌশিক নার্সিংহোমে থাকাকালীন সেটা অসম্ভব। সে নার্সিংহোমে নিয়মিত গেলেও বিষয়টি কৌশিককে জানিয়ে দিয়েছিল।
কৌশিক স্ত্রীর আস্থা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালায়, তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার অফিসের সহকর্মীরাও তার সাথে সহযোগিতা করে। ছবিটি ৬০তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিল।

পুরস্কার—
জুরিদের বিচারে উল্লেখযোগ্য ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পায়, এছাড়াও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্য অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন। ২০০৭ সালে নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসবে কঙ্কনা সেনশর্মা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে পুরস্কৃত হন।
আরও দেখুনঃ