অভিনেত্রী জয়া আহসান এর জীবনী নিয়ে আলাপ হবে আজ। আমরা জানবো জয়া আহসানের বয়স, উচ্চতা, ওজন, পরিবার সহ অন্যান্য সব ব্যক্তিগত বিষয় [ Jaya Ahsan Biography in Bengali | Jaya Ahsan Age, Height, Weight, Child] নিয়ে। জয়া আহসান বা জয়া মাসউদ একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় বাংলাদেশী মডেল ও অভিনেত্রী। জয়া পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রেও কাজ করেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি এ পর্যন্ত চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ছয়টি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ও তিনটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পূর্বসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।
জয়ার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ব্যাচেলর, মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। তিনি নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত, সৈয়দ শামসুল হক এর নিষিদ্ধ লোবান উপন্যাস অবলম্বনে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত, গেরিলা চলচ্চিত্রে বিলকিস বানু চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি রেদওয়ান রনি পরিচালিত চোরাবালি চলচ্চিত্রে সাংবাদিক নবনী আফরোজ চরিত্রে অভিনয় করে টানা দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি অনিমেষ আইচ পরিচালিত জিরো ডিগ্রী (২০১৫) ও অনম বিশ্বাস পরিচালিত দেবী চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে আরও দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
টলিউড থেকে শুরু করে ইন্টারন্যাশনাল খ্যাতি প্রাপ্ত এই অভিনেত্রী বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই তার প্রতিবার গুনে নিজেকে আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু করে তুলেছেন। কখনো তার বোল্ড চরিত্র আবার কখনো তার ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে উঠে এসেছে নানা বিতর্ক। তার সময়কালে তিনি আমাদের বিজয়া, গেরিলার মতো অসাধারণ চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন যা দর্শকদের অন্তরে চিরভাস্বর।
দুই বাংলার জনপ্রিয় মুখ জয়া আহসান। বিজ্ঞাপন আর নাটকের গণ্ডি পেরিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন ২০০৪ সালে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ দিয়ে। আর কলকাতায় তাঁর প্রথম ছবি ‘আবর্ত’। এরই মধ্যে কাজ করেছেন খ্যাতিমান অনেক নির্দেশকের নির্দেশনায়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে চার-চারবার জমা পড়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কার। পেয়েছেন ভারতের ফিল্মফেয়ার। হেঁটেছেন কান উৎসবের রেড কার্পেটে। ‘দেবী’ দিয়ে নাম লিখিয়েছেন প্রযোজনায়।
অভিনেত্রী জয়া আহসান
Jaya Ahsan Biography in Bengali | Jaya Ahsan Age, Height, Weight, Child
জয়া সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য:
সম্পূর্ণ নাম | জয়া আহসান (Jaya Ahsan) |
জন্ম তারিখ | ১ লা জুলাই,১৯৮৩ |
জন্ম স্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
নাগরিকতা | বাংলাদেশী |
জীবিকা | অভিনেত্রী, মডেল, গায়িকা |
রাশি | কর্কট |
বয়স | ৩৭ বছর |
জয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা:
জয়া ডিপ্লোমা করেছেন রবীন্দ্র সঙ্গীত ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে।
জয়ার ধর্ম:
জয়া জন্মসুত্রে মুসলিম। সেই অনুযায়ী সে মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
জয়া শারীরিক পরিসংখ্যান:
উচ্চতা | ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি |
ওজন | ৫০ কেজি |
চুলের রঙ | কালো |
চোখের রঙ | কালো |
জয়ার জীবিকা সম্পর্কে তথ্য:
জয়া অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিং করেন, বিভিন্ন ব্রান্ড এন্ডোর্স করেন। তিনি সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমীক প্রাপ্ত অভিনেত্রীদের প্রথম দিকে আছেন।
জয়ার পরিবার:
জয়ার বাবার নাম মহম্মদ এ.এস মাসুদ , মাতার নাম রেহানা মাসুদ। জয়া ১৯৯৬ সালে ফয়সাল হাসান (মডেল) কে বিয়ে করেন। তাদের একজন সন্তান রয়েছে, নাম কান্তা করিম।
জয়ার পছন্দ /অপছন্দ:
প্রিয় খাবার | মাছ, মটন, চকলেট |
প্রিয় অভিনেতা | অমিতাভ বচ্চন |
প্রিয় অভিনেত্রী | ঐন্দ্রিলা সেন |
প্রিয় রং | লাল,হলুদ,কালো |
প্রিয় গায়ক | লতা মঙ্গেশকার, আশা ভোসলে |
প্রিয় পর্যটন স্থান | সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড |
প্রিয় শখ | আঁকা, নাচ, ক্রাফটিং |
জয়ার সামাজিক গণমাধ্যম পছন্দ তালিকা:
- Facebook : Jaya Ahsan Facebook
- Instagram: Jaya Ahsan Instagram
- Twitter: Jaya Ahsan Twitter
বিতর্ক ও অজানা তথ্য
- জয়া ধূমপান করেন না।
- জয়া কি মদ্যপান করেন না।
- জয়ার সর্বাধিক প্রচারিত সিনেমা গুলো হল : গেরিলা,চোরাবালি,জিরো ডিগ্রী।
- জয়া একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারে বড় হয়েছেন।
- জয়ার পিতার ইচ্ছে ছিল তাকে একজন চাকুরিজীবি হিসেবে প্রতিষ্টিত করতে। জয়ার মা চাইতেন তাকে একজন গায়িকা বা চিত্র শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্টিত করতে | সেদিক দিয়ে মায়ের স্বপ্নই সফল হয়েছে।
- জয়া ১৯৯০ তে মডেলিং শুরু করেন |
- ১৯৯২ তে তিনি সাময়িকভাবে মডেলিং ছেড়ে দেন |
- ২০১১ থেকে ২০১৫ এর মাঝে তিনি সর্বমোট তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন |
- তিনি প্রথম বাংলাদেশী অভিনেত্রী যাকে Cannes Film Festival এ ডাকা হয় |
- একসময় উড়ো খবর এসেছিল যে তিনি ও তার স্বামীর ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে, যদিও তিনি তা নাকচ করেন |
- তিনি USAID (US Agency for International Development) এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর , যা মহিলা ও শিশুদের সাহায্য করে |
- তিনি তার আর্ট,ক্রাফট , সঙ্গীত ও নাচের প্রতি আবেগ প্রকাশে ঢাকায় সঙ্গীত চর্চার জন্য স্কুল স্থাপন করেছেন |
ইদানীং বয়সের ভুল তথ্য প্রচার নিয়ে বেশি ভাবাচ্ছে অভিনেত্রী জয়া আহসানকে। শুধু তাই নয়, জয়ার পারিবারিক তথ্যও ভুলভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তাই গণমাধ্যমে তার বয়স নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার না করার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়েছেন জয়া। এ নিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি।
জয়া লিখেছেন- ‘বিরসা দাশগুপ্তের ‘ক্রিসক্রস’ চলচ্চিত্রের টিজার ও গান মুক্তি পেল। অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছি আমরা। ভালো হোক কিংবা মন্দ- আমার অভিনীত চলচ্চিত্র কিংবা আমার কাজ নিয়ে বেশিরভাগ চলচ্চিত্র দর্শকই গুরুত্বের সঙ্গে মতামত দেন। কখনও আমার কাজ আমার ভক্তদের গর্ব বাড়িয়ে দেয়, কখনও আমি তাদের হতাশ করি।
তবে যারা আমার কাজ অপছন্দ করেন কিংবা যারা আমাকে অপছন্দ করেন, তাদের আমি অপছন্দ করি না। বরং তাদের ব্যাপারে আমি আরও অনেক বেশি যত্নশীল। গঠনমূলক সমালোচনাই তো একজন শিল্পীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। আমি আমার অভিনয় জীবনে বরাবরই সমালোচকদের দেখানো পথে চলার চেষ্টা করেছি।
তবে শুধু ‘বলার জন্য বলা’ নেতিবাচক মন্তব্য কখনও আমার ভেতর প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে আমি নির্ভার।’
তিনি আরও লিখেছেন- ‘তবে ইদানীং দুয়েকটি বিষয় আমাকে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে ইদানীং বেশ কয়েকজন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/উইকিপিডিয়ার তথ্যসূত্র টেনে আমার বয়স নিয়েও বেশ চর্চা করছেন। বলা হচ্ছে- আমার বয়স নাকি ৪৬ বছর! গুজব-গুঞ্জন আমি বরাবরই খাবারের লবণের মতো উপভোগ করে গেছি।
দুয়েকজন সমবয়সী কিংবা আমার চেয়ে বয়সে বড় শ্রদ্ধাভাজন সহকর্মী (বিশেষ করে বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী) গণমাধ্যমে নিজেদের অধিকার মনে করে আমার বয়স (ভুল তথ্য) নিয়ে চর্চা করেছে- বিষয়টি মজার।
তাই এতদিন উপভোগ করেই গেছি। তবে খুব সম্ভবত আমার চুপ থাকাটাকে অনেকে ‘মৌনতা সম্মতির লক্ষণ’ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। নিন্দুকেরাও ‘অস্ত্র’ হিসেবে আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করে আনন্দ পাচ্ছেন।’
একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় তার কাজ বলে মনে করেন জয়া। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমি প্রথম ও শেষবারের মতো সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই- বয়স নয়, একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তার কাজে।
জয়া আরও বলেন, ‘৪৬ কিংবা ৫৬ কিংবা তার চেয়েও বেশি বয়স হলেই অভিনেত্রীরা কাজের অযোগ্য কিংবা তারুণ্যদীপ্ত চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না- এমন ধারণা বিশ্বের কোনো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিজই পোষণ করেন না। তাই ব্যক্তি জয়া আহসানের যে বয়স, তা নিয়ে আমি এতটুকু বিচলিত নই।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন- ‘ভুল তথ্য প্রচার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার উদ্দেশ্যে অনুরোধ করছি। বিশেষ করে আমার কাজ যারা পছন্দ করেন, দায়িত্বশীল যেসব সাংবাদিক আমাকে নিয়ে দু কলম লেখার মতো যোগ্য মনে করেন, তারা ভবিষ্যতে বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে দেখবেন বলেই আশা করছি।
কারণ প্রকৃত সত্য হল- ৪৬ বছর আগে আমার বাবা-মায়ের বিয়ে তো দূরের কথা, দেখাও হয়নি। এতদিন বিষয়টি হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি। তবে ইদানীং বিষয়টি মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করায় পরিবার ও কাছের বন্ধুদের অনুরোধে লিখতে বাধ্য হয়েছি।
সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ, একজন শিল্পীর জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরার আগে ন্যূনতম একবার তার সঙ্গে কথা বলা উচিত। কারণ শুধু বয়স ভুলের তথ্যই নয়, বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, আমার আরও দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে (প্রকৃত তথ্য : আমরা দুই বোন ও এক ভাই)। বলা হয়, আমার বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় (প্রকৃত তথ্য : গোপালগঞ্জ)।
শুধু তাই নয়, আমার বাবার নামও লেখা হয় আলী আহসান সিডনী (প্রকৃত তথ্য : অভিনেতা জিতু আহসানের বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা সৈয়দ আহসান আলী সিডনী। আমার বাবা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এএস মাসউদ)। রয়েছে আরও অনেক ভুল তথ্য।
আশা করছি ভুল শুধরে ভবিষ্যতে আমরা প্রতিটি শিল্পী সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করব। কারণ ভক্তরা যেমন তার পছন্দের শিল্পী সম্পর্কে ভুল তথ্য কিংবা ভুল ব্যাখ্যা পড়তে পছন্দ করেন না, শিল্পীরাও প্রতিনিয়ত ভুল তথ্য দিয়ে ভক্তদের বিভ্রান্ত করতে চান না।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের কাছে বিনীত অনুরোধ, একজন অভিনেতার কাজ নিয়ে লেখার সময় যদি তার বয়সের বিষয়টি না আসে, একজন অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেও সে বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিকভাবে আসাটা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে কিন্তু আমাদের ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। সবার জন্য রইল শুভ কামনা।’
জয়া আহসান প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে নিজের কথা:
আর পড়ুনঃ